নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের ৮০-তম সাধারণ সভায় বক্তৃতায় যখন পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহযোগিতা, এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে সার্ক সংগঠন পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলছেন মুহাম্মদ ইউনূস , ঠিক তখনই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সেদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। ফলে বিদেশের মাটিতে আবার অপমানিত হতে হল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে। সভার বাইরে ‘গো ব্যাক ’ স্লোগান উঠল ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে।
নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে শুক্রবার ইউনূস বিরোধী জমায়েতে ‘ইউনূস পাকিস্তানের সমর্থক’ লেখা পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখান হাসিনা সমর্থকরা। তাঁরা বলেন, ‘ইউনূস জমানায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নিধন চলছে’। তাঁরা আরও বলেন, ‘ইউনূস বাংলাদেশকে অবৈধভাবে দখল করে, হিন্দুদের তাড়াচ্ছেন, তাঁর জমানাতেই বাংলাদেশে ছাড়তে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ হিন্দু সংখ্যালঘুদের‘।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন যে বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষ, সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বিক্ষোভের যে ভিডিওটি দেখা গিয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে বিশাল জনতা দেখা গিয়েছে। নিউ ইয়র্কের রাস্তায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। রাষ্ট্রসংঘে ইউনূসের ভাষণের পরেই বিক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে। অবিলম্বে ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে সরব হন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছেন ইউনূস, ইসলামিক চরমপন্থীদের হাতে তুলে দিয়েছেন দেশকে’।
অন্যদিকে, বিশ্বমঞ্চে ভারতকে আবার নিশানা করেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনকে ভাল চোখে দেখেনি ভারত। হাসিনা সরকার পড়ে যাওয়ায় ছাত্রদের আন্দোলনকে জঙ্গি আন্দোলনের তকমা দেওয়া হয়েছে। ইউনূস বলেন, ‘আমাকেও তালিবানি বলেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ।’ সার্ক অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার মূলেও ভারত’, এমন অভিযোগও করেন তিনি।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা আজ রাষ্ট্রসংঘের সামনে ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি, যিনি বাংলাদেশকে একটি তালিবান দেশ, একটি সন্ত্রাসী দেশ বানাচ্ছেন এবং তিনি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং সকল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সকল নৃশংসতা চালাচ্ছেন…।’ বিক্ষোভকারীদের অভিযো, ২০২৪ এর ৫ আগস্ট বেআইনিভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তারপর থেকে জঙ্গি সংগঠন এবং ইসলামিক সংগঠনগুলির সহযোগিতায় বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি অর্ধেক তালিবান রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছেন ইউনূস। তাঁর উচিত শীঘ্রই ক্ষমতা ত্যাগ করে দেশে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা।
ইউনূসের মন্তব্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের বাইরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ইউনূস জমানা বাংলাদেশের অন্ধকারতম অধ্যায়-এই স্লোগান তুলে সরব হন তাঁরা। অনেকের মতে, এই বিক্ষোভকারীরা হাসিনার সমর্থক। আওয়ামী লিগের সমর্থকরাই বিক্ষোভ দেখান বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে সাধারণ সভায় ইউনূসের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারত।