মাত্র তিন দিনেই বিদেশ সফর

ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বিদেশ বরাবরই যেন ডাকে৷ ভারতীয় ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যিনি তাঁর জীবনে একবার বিদেশ ভ্রমণ করতে চান না৷ কিন্ত্ত যাব বললেই তো আর যাওয়া হয়ে ওঠে না৷ বিদেশ ভ্রমণের ধাক্কাটাই অন্যরকম৷ বিদেশ যাত্রার পরিকল্পনা করলে প্রথমেই মাথায় আসে বাজেটের কথা৷ আবার অনেক সময় হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকলেও বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন না অনেকেই৷ তাঁদের সমস্যা হয় ছুটি নিয়ে৷ আসলে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য কম করে ৭ দিন সময় লাগে৷ কিন্ত্ত এত লম্বা ছুটি পাওয়া অনেক সময়ই সহজ হ না৷
আপনার হাতে যদি একটি লম্বা ছুটি নাও থাকে, তাহলেও চিন্তা নেই৷ তিন দিনেও বিদেশ ভ্রমণ সেরে ফেলা সম্ভব৷ আসলে, দিন তিনেকের ছুটিতেই কাজাখস্তান ঘুরে আসা যায়৷ এদিকে দিল্লি থেকে কাজাখস্তানের সরাসরি ফ্লাইটও রয়েছে৷ কলক্তা থেকে ওয়ান স্টপ ফ্লাইট পেয়ে যাবেন সহজেই৷ আর তিন দিনের জন্য কাজাখস্তান যাওয়ার পরিকল্পনা করলে আপনাকে একটি ট্রানজিট ভিসা দেওয়া হবে৷ আর এটি জারি করার আগে, আপনার হাতে অবশ্যই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কাজাখস্তান থেকে ভারতে ফেরার টিকিট থাকা চাই৷কাজাখস্তান কী ধরনের দেশ? কাজাখস্তান, নামের মতোই সুন্দর আর আকর্ষণীয় মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ৷ এটি এমন একটি দেশ যেটি বাজেট ফ্রেন্ডলি৷এমনকী আকর্ষণীয় সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলিও৷ শুধু তাই নয়, এখানকার মুদ্রাও বেশ সস্তা৷ সেদেশে গিয়ে যদি বার্গার খেতে চান, তাহলে ৯০ টাকারও কম দামে সুস্বাদু বার্গার পেয়ে যাবেন৷ এদিকে কাজাখস্তান ‘নাইট লাইফ’ প্রিয় লোকজনদের কাছে স্বর্গের চেয়ে কম কিছু নয়৷ এখানকার রাতের জীবন অতুলনীয়৷
আপনি যদি এই দেশটি দেখার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে জেনে রাখা দরকার যে, এখানে পৌঁছাতে দিল্লি থেকে মোটামুটি ৩.৩০ ঘণ্টা সময় লাগে৷ ওয়ান স্টপ ফ্লাইট হওয়ায় কলকাতা থেকে অবশ্য দশ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগতে পারে৷ এখানকার মানুষজন খুব সহজ-সরল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ৷ প্রথমবার গেলেও কাজাখস্তানকে অচেনা বলে মনে হবে না, কিংবা একা বোর হতে হবে না৷
কাজাখস্তান বিশ্বের নবমতম বৃহত্তম দেশ এবং বিশ্বের দীর্ঘতম সীমান্তের দেশ৷ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার বিদেশি ভ্রমণকে এক অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাবে৷ সেই সঙ্গে এখানকার উপত্যকা, পাহাড়, হ্রদ, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে ঘনিষ্ঠভাবে জানার সুযোগ পাবেন৷ আলমাটি হ্রদ খুবই সুন্দর৷ আলমাটি কাজাখস্তানের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত৷ দিল্লি থেকে সরাসরি তিন ঘন্টার ফ্লাইট হোক বা কলকাতা থেকে ওয়ান স্টপ ফ্লাইট, সমস্ত ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে কাজাখস্থানের সৌন্দর্য৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই হ্রদের উচ্চতা প্রায় ২৫১১ মিটার৷ জলবিদু্যৎ শক্তির পাশাপাশি পানীয় জলের উৎস হিসেবেও আলমাটি হ্রদ ব্যবহূত হয়৷
শ্যারিন ক্যানিয়নশ্যারিন ক্যানিয়ন আলমাটির প্রায় ২১৫ কিলোমিটার পূর্বে শ্যারিন জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত৷ ড্রাইভ করে প্রায় চার ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যায় এখানে৷ এই গিরিখাতের আয়তন আমেরিকান ক্যানিয়নের চেয়ে কম, কিন্ত্ত তা সত্ত্বেও এই ক্যানিয়নটি দেখতে দারুণ আকর্ষণীয়৷ কোক টোবি হিলকোক টোবি কাজাখস্তানের একটি পাহাড়৷ এখানে যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ উপায় হল কেবল্ কার৷ কোক-টোবি হিলে কেবল্ কার যাত্রার পর সেখানকার স্থানীয় স্টল এবং রেস্তোরাঁয় সুস্বাদু সব স্থানীয় চেখে দেখার সুযোগ পাবেন৷ ঘুরে নিতে পরেন এখনকার চিডি়য়াখানাও৷ পার্ক অফ প্যানফিলোভ ২৮ গার্ডস্-ম্যানকাজাখস্তানের স্বাধীনতা লাভে এই প্যানফিলভের ২৮ গার্ডস্-ম্যানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই এই স্থানের নিজস্ব ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে৷ অনন্ত শিখায় প্যানফিলভের মূর্তি এবং এই পার্কের অন্যান্য ভাস্কর্যগুলি এখনও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগের স্মৃতি বহন করে চলেছে৷