বাংলাদেশে ‘ডেভিল হান্ট’, গ্রেপ্তার ১৩০০

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

শয়তানের খোঁজ শুরু করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গালভরা এই নামের পিছনে উদ্দেশ্য একটাই, বেছে বেছে আওয়ামি নেতা-কর্মী এবং শেখ হাসিনার সমর্থকদেরই গ্রেপ্তার করা। ধানমন্ডির ঘটনার পর এবার গাজীপুর উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসার পরই শনিবার বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিলো। সেখানে বলা হয়েছিলো, ‘ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। এ বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েলেন, ‘যারা দেশে অশান্তি করার চেষ্টা করছে, তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হবে।’

রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই ডেভিল হান্ট অভিযান চালিয়ে গাজীপুরে আরও ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী গাজীপুর শহরে ৭৯ জন ও জেলায় প্রাক্তন সাংসদ-সহ ৫ থানায় ২১ আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুমিল্লায় শেখ হাসিনার দলের সঙ্গে যুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নোয়াখালির হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জন আওয়ামী লীগ নেতা সহ ১ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে। সব মিলিয়ে শুধু গাজীপুরে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৮০ জন। বাংলাদেশ জুড়ে মোট গ্রেপ্তারির সংখ্যা ১ হাজার ৩০০ জন। তবে এই অভিযানে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, বিপ্লবী ছাত্রজনতা দলের হামলার বিরুদ্ধে এবার পালটা প্রতিরোধ গড়ে ওঠায় কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছে ইউনূস প্রশাসন। তাই আওয়ামী নেতা-কর্মীদের টার্গেট করেছে সরকার।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের ৬ মাস পরে নতুন করে অশান্তিতে উত্তপ্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা। ধানমন্ডির ঘটনার পর এবার গাজীপুর উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ৩২ ধানমন্ডির শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্রদল। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ উঠেছিলো। সেই বিক্ষোভের আঁচ গাজীপুরে পৌঁছতেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পাল্টা হামলার মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা। হাসিনা সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে একদল জনতা চড়াও স্থানীয় কিছু মানুষ হামলাকারীদের কয়েকজনকে মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ।


এই হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ঘটনা পরেই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। ইউনূস সরকারের নির্দেশে শুরু হয়ে যায় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। অপারেশনের অংশ হিসেবে, সরকার পুলিশের সদর দফতরে একটি কমান্ড সেন্টার স্থাপন করেছে, যেখানে সমস্ত বাহিনীর প্রতিনিধিরা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, শয়তানের খোঁজ অভিযান দীর্ঘমেয়াদী হবে। দেশে শান্তি ফেরাতেই এই অভিযান। ফলে যত দিন না সেই উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে, তত দিন অভিযান চলবে।