ইন্টারনেটের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারল না চিঠি। অবশেষে থেমে গেল পথচলা। ইমেল, মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামের যুগে প্রায় অচল সে। কাগজে ধরা পড়ে না আগের মতো আবেগ। সময় নেই কারোর অপেক্ষা করার। তাই ডাকযোগে চিঠি পাঠানোর পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল ডেনমার্ক। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বন্ধ করল চিঠি পরিষেবা।
ডেনমার্কের প্রাচীনতম সরকারি পরিষেবাগুলির মধ্যে একটি ছিল ডাকযোগে চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থা। ১৬২৪ সালে চালু হয় এই ব্যবস্থা। মঙ্গলবার ডেনমার্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পোস্টনর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, ৪০১ বছর পর ডাকযোগে চিঠি পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে। ডেনমার্কের জনগণ ডিজিটাল যোগাযোগের উপর বেশি নির্ভরশীল। তাই ডাকব্যবস্থার আর প্রয়োজন নেই। অতএব বিদায়।
মঙ্গলবার ছিল চিঠি পাঠানোর শেষ দিন। ডেনমার্কের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, এদিনই ডাকব্যবস্থা চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল। পোস্টনর্ড একটি বিবৃতিতে বলেছে, টুকটাক পার্সেল ডেলিভারি ছাড়া ডাকব্যবস্থার উপর আর নির্ভরশীল নন নাগরিকেরা। প্রিয়জনকে আর কেউ চিঠি লেখেন না। অফিস-কাছারির চিঠিপত্রও এখন একান্ত ভাবে ইন্টারনেট ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। ফলে সরকারি পরিষেবা চালু রাখার কোনও যুক্তি নেই বলে মনে করা হচ্ছে। কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও এটাই সময়ের দাবি। পোস্টনর্ডের প্রধান নির্বাহী কিম পেডারসেন এই পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন।
তাঁর কথায়, ‘একটি অধ্যায় শেষ হল। আর একটি অধ্যায় শুরু হবে।’ কিম আরও বলেন,‘আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চিঠি বিতরণ করেছি। সেটা বন্ধ হল। ডেনমার্কের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ই-কমার্স। যেখানে পার্সেলের সংখ্যা এখন চিঠির চেয়ে অনেক অনেক বেশি।’ ডেনমার্কের সরকারি মহল জানিয়েছে, ডিজিটালাইজ়েশনের যুগে ক্রমশ বদলে যাচ্ছে দুনিয়া। গত ২৫ বছরের মধ্যে ডেনমার্কে চিঠির পরিমাণ ৯০ শতাংশ কমে গিয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে লোকজন চিঠি লেখা এবং পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে আর্থিক লোকসানে চলছিল পোস্টনর্ড।