জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুতে উত্তাল বাংলাদেশ। ক্রমবর্ধমান অশান্তির পরিস্থিতি বিচার করে চট্টগ্রামের ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি। একই সঙ্গে সিলেটের ভারতীয় উপদূতাবাস ও ভিসা আবেদন কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে খবর।
চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার জানান, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির জেরে সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। সেই কারণেই রবিবার থেকে চট্টগ্রামের ভিসা কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত ভিসা সংক্রান্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে। এই মর্মে ভিসা কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে আইভ্যাক। যেসব ভিসা আবেদনকারীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত ছিল, তাঁদের জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।’
অন্যদিকে, সিলেটে অবস্থিত ভারতের সহকারী হাই কমিশনের দপ্তর ও ভিসা আবেদন কেন্দ্রের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যাতে কোনও তৃতীয় পক্ষ নতুন করে অশান্তি ছড়াতে না পারে, সে কারণেই ভারতীয় উপদূতাবাস ও ভিসা কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই এই পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ ও হিংসার ঘটনা সামনে আসে। ‘হাসিনা ফেরাও’ স্লোগান তুলে কিছু জায়গায় প্রগতিশীল সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষোভের আঁচ পড়ে ভারতীয় দূতাবাস, আওয়ামী লীগের দপ্তর এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের উপরও।
অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই অশান্তির মধ্যেই চট্টগ্রামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু এবং ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবক হত্যার ঘটনা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও বাড়ছে উদ্বেগ।