গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের জেরে পতন ঘটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তিনি। এরপরই বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে মুহম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার। ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-সহ তাঁর আমলাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে ইউনূস সরকার।
হাসিনা-সহ মোট তিন জন অভিযুক্ত প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে ঢাকার আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে। মামুন বর্তমানে এই মামলায় নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। এর আগে মামলার শুনানি পর্বে একাধিকবার ইউনূস সরকারের তরফে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি করা। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি পর্ব শেষ হয় আদালতে। এই মামলার রায় আগামী ১৩ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন বিচারপতির বেঞ্চে হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাটি চলছে। বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন ওই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মোহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার আদালতে সওয়াল জবাব পর্বের সমাপ্তিসূচক বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সর্বোচ্চ শাস্তি, মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান তিনি। বাংলাদেশের ঘোষিত ‘পলাতক’ দুই অভিযুক্ত হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষ নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি দুই অভিযুক্তের খালাসের আর্জি জানান। পরে ট্রাইব্যুনাল জানায়, আগামী ১৩ নভেম্বর হাসিনাদের বিরুদ্ধে মামলায় রায় ঘোষণার দিন জানানো হবে।
জনবিক্ষোভের জেরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বিমানে ঢাকা থেকে উত্তরপ্রদেশের হিন্দন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে চলে আসেন হাসিনা। আপাতত ভারতেই সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। হাসিনাকে ফেরত চেয়ে কূটনৈতিক স্তরে ভারতের কাছে অনুরোধ পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ভারতের তরফে ওই কূটনৈতিক অনুরোধের প্রাপ্তিস্বীকার করা হলেও এখনও পর্যন্ত পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে জানানো হয়নি।