শেখ হাসিনার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ আদালতের

সোমবার হাসিনাকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে বাংলাদেশ আদালত। হাসিনার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও। ফাঁসির সাজার সঙ্গে হাসিনা এবং আসাদুজ্জামানের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ।

২০২৪ সালের নির্বাচনী হলফনামায় দুই জন নিজেদের ঘোষিত সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন। তা উদ্ধৃত করেছে বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাসিনা প্রার্থী হয়েছিলেন ঢাকা-১২ এবং কামাল প্রার্থী হয়েছিলেন গোপালগঞ্জ-৩ থেকে।

হলফনামায়  নিজের নামে মোট ৪ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দেখিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী। ২০২৪ সালে হাসিনার হাতে নগদ অর্থ ছিল সাড়ে ২৮ হাজার টাকা। ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল প্রায় ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া ২৫ লক্ষ টাকার সঞ্চয় এবং ৫৫ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানতও ছিল মুজিব-কন্যার।


হলফনামা অনুযায়ী, হাসিনার তিনটি গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে একটি উপহার পাওয়া। বাকি দু’টির দাম সাড়ে ৪৭ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার সোনা ও অন্যান্য বহুমূল্য ধাতুর গয়না রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার আসবাবপত্রও রয়েছে হাসিনার।

টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর ও রংপুরে  মোট ১৫.৩ বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় হাসিনার নামে তিনতলার একটি বাড়ি রয়েছে। একটি বাগানবাড়িও আছে হাসিনার। গাজীপুরের অদূরে মৌচাকে ৯ বিঘা জমির উপর রয়েছে সেই বাগানবাড়ি। হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং তাঁদের সন্তানদের নামে রয়েছে মালিকানা।

ঢাকার পূর্বাচলে একটি ৩৫ লক্ষ টাকার দামে জমি রয়েছে হাসিনার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন হাসিনার বিরুদ্ধে জমি অধিগ্রহণ করার অভিযোগ ওঠে। নিজের ছেলে, মেয়ে, বোন এবং বোনের সন্তানদের প্রত্যেকের নামে পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট অধিগ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মুজিব পরিবারের ছ’জন মোট ৬০ কাঠা জমি বেআইনিভাবে পেয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। তা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও চলছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় সম্পত্তি নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। সেই সময় মোট জমির পরিমাণ ছিল ৬.৫০ একর।  ২৮ একরেরও বেশি স্থাবর সম্পত্তি ছিল তাঁর নামে।

২০২৪-এর নির্বাচনের আগে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের স্থায়ী আমানত ও সঞ্চয়ে ছিল ২ কোটি ১ লক্ষ টাকা। ব্যাঙ্কে ছিল ৮২ লক্ষ টাকা। বন্ড ও শেয়ার ছিল ২৪ লক্ষ টাকার। এ ছাড়া, প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা নগদ ছিল। দু’টি গাড়ি রয়েছে। যার মোট দাম দেড় কোটি টাকারও বেশি। আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিন ডিভাইস রয়েছে ২ লক্ষ টাকার। ৫ বিঘার বেশি কৃষিজমি, দু’টি বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। সব মিলিয়ে অন্তত ১০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার সম্পদের মালিক আসাদুজ্জামান।