২৮ ডিসেম্বর মায়ানমারে নির্বাচন, গণতন্ত্র ফেরা নিয়ে আশাবাদী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দীর্ঘ দমননীতি, বিদ্রোহীদের অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক চাপ— এই তিনের চাপে শেষ পর্যন্ত সাধারণ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করতে বাধ্য হল মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকার। সোমবার শাসক জেনারেল মিন আং হ্লাইং জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। তিন সপ্তাহ আগে জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। এবার তার পরবর্তী পদক্ষেপ ভোটের দিন নির্ধারণ।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের নভেম্বরে হয়েছিল মায়ানমারের শেষ জাতীয় নির্বাচন। আউং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে এনএলডি সরকারকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশজুড়ে শাসন চালাচ্ছে চিন-ঘনিষ্ঠ সামরিক জুন্টা, যারা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও জাতিগত গোষ্ঠীগুলির উপর ধারাবাহিক দমননীতি চালিয়েছে। অবশেষে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আশায় রয়েছেন মায়ানমারবাসী। আশাবাদী আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলও।

কিন্তু গত বছর নভেম্বর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে তিন বিদ্রোহী সংগঠন একত্র হয়ে চালায় ‘অপারেশন ১০২৭’। এতে দেশটির বহু অঞ্চল জুন্টার হাতছাড়া হয়ে যায়। এমনকি বিদ্রোহীদের পেছনে চিনের গোপন সমর্থনের অভিযোগও উঠেছে। এই টানা চাপেই জুন্টা সরকারের পিছু হটা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে— ভোট হলে কি সত্যিই ক্ষমতা শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করবে সামরিক বাহিনী? রাজনৈতিক মহলের মতে, মায়ানমারের বাস্তবতায় সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ নির্বাচনে ৫৫টি রাজনৈতিক দল নথিভুক্ত হয়েছে। ফলে একদিকে বিদ্রোহীদের চাপ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নজরদারি— এই দুইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ২৮ ডিসেম্বরের ভোট মায়ানমারের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমীকরণ নির্ধারণ করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।