সিএএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ আমেরিকার, ‘অযৌক্তিক উদ্বেগ’ বার্তা ভারতের 

ওয়াশিংটন, ১৫ মার্চ –  ভারতে লাগু হওয়া সিএএ নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকা। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান নিয়ে ভারতে এই আইন প্রয়োগের উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জো বাইডেনের সরকার। কীভাবে এই আইন প্রণয়ন করা হবে তার দিকে নজর রাখা হয়েছে। এমনটাই জানালেন আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। বৃহস্পতিবার তিনি সিএএ নিয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। গোটা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা । যদিও  আমেরিকার সিএএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরেই জবাব দেয় দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আমেরিকার উদ্বেগকে নস্যাৎ করে ওয়াশিংটনের বার্তাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছে ভারত। সিএএ ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘‘গত ১১ মার্চ ভারত সরকার সিএএ নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, আমরা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই আইন কী ভাবে প্রণয়ন করা হচ্ছে, আমরা সেই দিকে নজর রেখেছি। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আইনে সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকার মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতি।’’তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক আদর্শের মূল ভিত্তি হল ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান করা এবং সব ধর্মের মানুষের জন্য এক আইন প্রয়োগ করা। সে কারণে নয়াদিল্লি কীভাবে এই আইন কার্যকর করে, সেটাই আপাতত নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।
 
এদিকে সিএএ নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগের জবাব দিয়েছে ভারত। সিএএ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন, একথা বলার পরই শুক্রবার ভারতের তরফে প্রতিক্রিয়া, ‘ আমেরিকার বক্তব্য অযৌক্তিক, বিভ্রান্ত এবং অনভিপ্রেত।’ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যে আমেরিকার নাক গলানো পছন্দ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেয় দিল্লি। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র শুক্রবার বলেন, সিএএ হল নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধি। কেড়ে নেওয়ার আইন নয়। এই আইন মানুষের সম্মান এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য। মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের সিএএ নিয়ে আগ বাড়িয়ে মনোভাব প্রকাশকে অযৌক্তিক ও অনভিপ্রেত বলে মনে করে ভারত।দিল্লি বলেছে, ভারতের বহুত্ববাদী ঐতিহ্য নিয়ে যাদের কোনও ধারণা নেই এবং দেশভাগের পরের ইতিহাস জানা নেই, তাদের কাছ থেকে ভাষণ শুনতে চায় না ভারত সরকার।
 
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গত সোমবার ‘আচমকা’ সিএএ আইন চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে ভারত তা দেবে। সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দেন । কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হলেও সোমবার হঠাৎ বিজ্ঞপ্তি জারি হলে দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি  হয়।