কর্মীদের ক্লোনই হাতিয়ে নিল ২০০ কোটি টাকা

3d rendering humanoid robot with ai text in ciucuit pattern

হংকং, ৬ ফেব্রুয়ারি– ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা এআই-কে বর্তমানে নানা কাজে সহায়ক হিসেবেই ধরা হচ্ছিল৷ তবে ধীরে ধীরে এর নানা কালো দিক যেভাবে সামনে আসছে তাতে এই প্রযুক্তি নিয়ে ফের ভাবতে হবে স্বয়ং এর শ্রষ্ঠাকেই৷ কিছুদিন আগেই যেমন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু বিখ্যাত ব্যক্তিদের মুখ বসিয়ে নানান আপত্তিকর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া হচ্ছিল৷ তবে এবার এই এআই ব্যবহার করে যা করা হয়েছে তা রীতিমতো আর্থিক ক্ষেত্রে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো৷
এবার, ডিপফেকের দৌলতে এক বড় মাপের প্রতারণার শিকার হল হংকং-এর এক বহুজাতিক সংস্থা৷ হংকং পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থার কর্মচারীরা এক ভিডিয়ো কনফারেন্সে মিলিত হয়েছিলেন৷ বিস্ময়কর হল, একজন মাত্র কর্মচারী ছাড়া, ভিডিয়ো কনফারেন্সটিতে অংশগ্রহণকারী সকল ব্যক্তিই ছিলেন নকল৷ ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তাদের ডিজিটাল ক্লোন তৈরি করা হয়েছিল৷ আর সেই ডিজিটাল ক্লোনগুলিকেই সংস্থার আসল কর্মচারীদের বলে ধরে নিয়েছিলেন ওই কর্মী৷ এই সামান্য ভুলের দিতে হয়েছে বড় খেসারত৷ খোয়া গিয়েছে সংস্থার ২৫.৬ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ২০০ কোটির টাকারও বেশি অর্থ ৷
ডিপফেক হল এক ধরনের সিন্থেটিক মিডিয়া কনটেন্ট৷ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির অবিকল ভিডিয়ো কনটেন্ট তৈরি করা হয়৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ধরনের ভিডিয়ো তৈরির পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে৷ এই ক্ষেত্রেও প্রতারকরা তাই করেছিল৷ সংস্থার চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার বা সিএফও-সহ সংস্থার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্তা এবং অন্যান্য কর্মীদের ডিজিটাল ক্লোন তৈরি করা হয়েছিল৷ অর্থাৎ, ডিজিটাল পরিসরে তাদের দেখে নকল বা কম্পিউটারে তৈরি করা বলে, চেনার উপায় ছিল না৷ সংস্থাটির ভিডিয়ো কনফারেন্সে, আসল মানুষ ছিলেন সংস্থার অর্থ বিভাগের এক কর্মচারী৷
ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের৷ সংস্থার সিএফও ব্রিটেনে থাকেন৷ তাঁর কাছ থেকে অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মীটি আচমকা একটি বার্তা পেয়েছিলেন৷ এক গোপন আর্থিক লেনদেনের নির্দেশ ছিল সেই বার্তায়৷ প্রাথমিভাবে ওই কর্মচারীর সন্দেহ হয়েছিল৷ তারপরও তিনি ওই গ্রুপ ভিডিয়ো কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার ফাঁদে পা দেন৷ ভিডিয়ো কল চলাকালীন, সংস্থার এক নিখুঁত ডিপ ফেক ভিডিয়ো উপস্থাপন করা হয়েছিল, যে কর্মীটির সকল সন্দেহ দূর হয়ে গিয়েছিল৷ এরপর, সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের ডিজিটাল ক্লোন, অর্থ বিভাগের ওই কর্মীকে, হংকংয়ের পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে ২৫ মিলিয়ন ডলার স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়৷
এর প্রায় এক সপ্তাহ পর, ওই কর্মী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন৷ পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারকরা ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের ডিজিটাল ক্লোন তৈরি করেছিল৷