আমেরিকার পর ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশকেই সংযত হওয়ার বার্তা দিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক। একইভাবে এর আগে উভয় দেশকেই সংযত থাকার বার্তা দিয়েছিল আমেরিকাও। দিল্লিতে ফোন করে এই বার্তা দিয়েছিলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। এবার সেই পথে হাঁটল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক শীর্ষ প্রতিনিধি কাজা কাল্লাস শুক্রবারই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। দুই দেশকে সংযত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পরে সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘আমি দুই পক্ষকেই সংযম প্রদর্শন করার অনুরোধ করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ, উত্তেজনা বাড়লে কেউই লাভবান হয় না।’
প্রশ্ন উঠেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিচারিতা নিয়ে।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে রীতিমতো অস্ত্র দিয়ে সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যদিকে ভারতের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রতি সংযত হওয়ার অনুরোধ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘দ্বিচারিতা’এক্ষেত্রে খুবই প্রকট। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা বলে তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা বাড়িয়ে কারও কোনও লাভ হয় না।’
তবে পাকিস্তান যে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের দিয়েছে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র উল্লেখ নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটাও দ্বিচারিতাই বলা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং সমাজ মাধ্যমের বহু সাধারণ মানুষও এমনটাই মনে করছেন। তাঁরা কায়া কাল্লাসের এই ‘সমদূরত্বের নীতি’কে আদতে পক্ষপাতদুষ্ট বলেই কটাক্ষ করছেন।
একজন বিশ্লেষক টুইটে লেখেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই বক্তব্যে এটাই স্পষ্ট যে, তারা ভারত-পাকিস্তানকে একই মাপকাঠিতে বিচার করে। অথচ বাস্তব ছবি একেবারেই আলাদা।’ অন্য এক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ লেখেন, ‘অধিকাংশ ভারতীয় ইউরোপের কাছ থেকে পাকিস্তান সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ কিছু আশা করেন না। ইইউ তো পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ফলে বহুদিন ধরেই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।’
এর আগে জয়শঙ্করকে ফোন করে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশ সচিব। ওয়েবসাইটে লেখা হয়, ‘দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করুক ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখতে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক।’