গাজায় প্রতি ৪০ মিনিটে ১ জন শিশুর মৃত্যু

প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় প্রতি ৪০ মিনিটে একজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়েছে। এই সেনা অভিযানের পরে গাজায় শিশু মৃত্যু সম্পর্কে গাজার স্বশাসিত স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৬ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলের হানায়।

গাজা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক মারওয়ান আল-হামস দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে, নাসের মেডিক্যাল কমপ্লেক্সে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ইজরায়েল ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়ে পড়েছে। ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে হাজার হাজার শিশু এবং গর্ভবতী মহিলা চিকিতসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা সঙ্কট আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, ইজরায়েলের হামলার জেরে এবং ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার কারণে শিশুরা দিনে মাত্র একবার করে খাবার খেয়ে তাও পেটভরা নয়, বেঁচে রয়েছে। এছাড়াও বিশুদ্ধ জল এবং সঠিক পুষ্টি অভাব তো রয়েইছে। মারওয়ান আল-হামস আরও বলেন, হাজার হাজার শিশু বাস্তুচ্যুত কেন্দ্রগুলোতে বাস করছে। অন্যদিকে গর্ভবর্তী নারীদেরও হাসপাতালে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

ইজরায়েলের হামলায় এখনও পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৭৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৯০৮ জন কোলের শিশু এবং ৩১১ জন সদ্যোজাত। প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিরতি ভেঙে মার্চের শুরুতে ইজরায়েলি ফৌজ গাজায় হামাস বিরোধী অভিযান শুরু করেছিল। প্যালেস্টাইনের শরণার্থী বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এপ্রিলের শুরুতে একটি রিপোর্টে জানিয়েছিল, গত ১৮ মার্চ থেকে প্রতি দিন অবরুদ্ধ গাজায় অন্তত ১০০ জন প্যালেস্টাইনের শিশু হতাহত হচ্ছে।


মার্চের শুরু থেকেই গাজায় কোনও মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তেল আভিভ। ফলে ভয়াবহ খাদ্য এবং পানীয়ের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরেই গাজা আক্রমণ করে ইজরায়েল সেনা। বহু ঘরবাড়ি, হাসপাতালের উপর হামলা চালানো হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে মাস দুয়েক যুদ্ধবিরতি চললেও গত ১৮ মার্চ তা লঙ্ঘন করে আবার হামলা শুরু করে ইজরায়েল বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে, সেই সময়ে সেখানে মোট ৫২ হাজার ৬১৫ জন নিহত হন। আহত হন ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৫২ প্যালেস্টাইনি।