ইয়েমেনের তেলের বন্দরে বোমাবর্ষণ মার্কিন সেনার, নিহত ৩৮

ইয়েমেনের তেলের বন্দর রাস ইশায় বড়মাপের অভিযান চালিয়েছে আমেরিকা। শুক্রবার সকালে পশ্চিম ইয়েমেনের একটি তেলের বন্দরে বোমাবর্ষণ করে মার্কিন সেনা। বিমানহানায় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক বলে দাবি করেছে হুথিগোষ্ঠী। এই আক্রমণের বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র এই সংগঠন। লোহিত সাগরের তীরে ইয়েমেনের হোদেইদা গভর্নরেটে তেলের উৎসই নিশানা ছিল আমেরিকার। গত কয়েকদিন ধরেই এই ঘাঁটির উপর নজর ছিল আমেরিকার।

মার্কিন সেনাবাহিনীর দাবি, ইয়েমেনের বিদ্রোহী হুথি জঙ্গিদের জ্বালানির উৎস বন্ধ করার জন্যই এই হামলা চালানো হচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরানের মদতপুষ্ট হুথি জঙ্গিদের তেলের উৎস ধ্বংস করতে পদক্ষেপ। এই উৎস থেকে বেআইনিভাবে আয় করছে জঙ্গিরা। সেই অর্থ গত এক দশকে ওই অঞ্চলের জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ এদিনের অভিযানের লক্ষ্য সাধারণ মানুষ ছিল না বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

এদিকেওয়াশিংটন জানিয়েছে, লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের উপর হুথিদের আক্রমণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা ইয়েমেনে হুথি গোষ্ঠীর অবস্থানগুলিতে আক্রমণ চালিয়ে যাবে।


অন্যদিকে, আমেরিকার এই আক্রমণের পালটা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে হুথিরা।গাজায় ইজরায়েলি আগ্রাসন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সামরিক অভিযান চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। শুক্রবারই ইজয়ায়েলে মিসাইল ছোড়ে হুথি বিদ্রোহীরা। কিন্তু সেই হামলা প্রতিহত করে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস।

দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর হুথিদের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছেন। চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় কমপক্ষে ১২৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই অসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তারা।গত সোমবার ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন হামলায় আরও ২৪৭ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

উল্লেখ্য, গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলের হামলা শুরুর পর ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র হুথিগোষ্ঠী ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ইয়েমেন উপকূল থেকে ধারাবাহিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে লোহিত সাগরগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলির ওপর। আমেরিকা ও ইউরোপের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছে কয়েকটি ভারতীয় বাণিজ্যিক জাহাজও। পাশাপাশি, ইজরায়েলকে নিশানা করেও ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে তারা।এই লড়াইয়ে তারা হামাসের পাশে।

কয়েক মাস আগেই আমেরিকান সেনা হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। রাজধানী সানার উত্তরের বিভিন্ন অংশ এখনও হুথিদের নিয়ন্ত্রণে। ইরানের পাশাপাশি লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লার থেকেও তারা অস্ত্র সাহায্য পায় বলে অভিযোগ। গত বছরের ডিসেম্বরে হুথি বাহিনী ইজরায়েলে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘প্যালেস্টাইন-২’ দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। তার পর থেকে ইজরায়েলও ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনে।