পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বোনদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী আইনে মামলা রুজু করল শাহবাজ শরিফ সরকার। ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না— এই অভিযোগে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন তাঁর দুই বোন আলিমা খান ও নৌরিন নিয়াজি। সেই ঘটনার পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী আইনের ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যম।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেলের বাইরে বিক্ষোভ ও অশান্তির ঘটনায় ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর ১৪ জন নেতা-কর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশকর্মীদের উপর হামলা, ১৪৪ ধারা ভাঙা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। পিটিআই নেতা সলমন আক্রম রাজা, নইম পঞ্জোথা, কাসিম খান, আলিয়া হামজা ও রাজা নাসির আব্বাসের নামও এফআইআরে রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। ওই দিন ইমরানের সঙ্গে জেলে দেখা করতে যান তাঁর তিন বোন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পিটিআই নেতা ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মহম্মদ সোহেল আফ্রিদি। কিন্তু কাউকেই ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এর পরেই আদিয়ালা জেলের বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়। বুধবার ফের বিক্ষোভে বসেন ইমরানের বোনেরা ও পিটিআই সমর্থকেরা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতেই পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকে আদিয়ালা জেলে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একাধিক বার তিনি অভিযোগ করেছেন, জেলে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এমনকি পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিরুদ্ধেও প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এর পর থেকেই ইমরানের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে নিয়মিত সরব হন তাঁর বোনেরা। যদিও জেল কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেননি।
গত মাসেও ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন তাঁর তিন বোন। পরে তাঁদের মধ্যে এক জনের সাক্ষাৎ হলেও, ফিরে এসে তিনি অভিযোগ করেন— ইমরানকে নির্জন কারাগারে রেখে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই আবহেই নতুন করে মামলা ও গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে পাক রাজনীতিতে ফের তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে।