দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে ছাব্বিশের নির্বাচন। তার আগে শুরু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন মতুয়ারা। এসআইআর বিরোধিতা এবং মতুয়া ও নমঃশূদ্রদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে ঠাকুর বাড়িতে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ মতুয়া, গোঁসাই ও দলপতিদের আমরণ অনশন রবিবার ১২দিনে পড়ল।
এই পরিস্থিতিতে মতুয়াদের পাশে দাঁড়াতে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছেছেন তৃণমূলের তিন প্রতিনিধি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে যান শশী পাঁজা, স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং তন্ময় ঘোষরা। এর আগে কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীও মতুয়াদের অনশন মঞ্চে যান।
এসআইআরের ফলে মতুয়াদের অনেকের নাম বাদ যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এসআইআরের ফলে কারও নাম বাদ গেলে সিএএ-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়াদের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তবে এই আশ্বাসে চিড়ে ভেজেনি।
যত দিন গড়াচ্ছে এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক বেড়েছে মতুয়াদের মধ্যে। তার ফলে ১২ দিন ধরে অনশন চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মতুয়ারা। সেই অনশন মঞ্চে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরও। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।
এই আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে আগামী ২৮ ডিসেম্বর কলকাতার রানি রাসমণি রোডে একদিনের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছেন তৃণমূল প্রভাবিত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ। এ দিন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি দিল্লিতেও অবস্থান বিক্ষোভ করা যায় কি না, তারও ভাবনা–চিন্তা চলছে।
মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। সিপিএম, কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছে। একজনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ পড়লে বৃহত্তর আন্দোলনের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাগরিকত্বের প্রশ্নে গত কয়েক বছর ধরে মতুয়াদের বেশিরভাগ সমর্থন পেয়ে এসেছে বিজেপি। এসআইআর আবহে মতুয়ারা যখন নাগরিকত্ব নিয়ে আশঙ্কায় সেই সময় তৃণমূল ওই ভোটব্যাঙ্কে ধস নামাতে চাইছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সম্ভবত সেই কারণেই তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ঠাকুরবাড়ি গিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।