অবসর নিলেন যুবরাজ

যুবরাজ সিং (Photo: IANS)

নিজের ক্রিকেটের কেরিয়ারে আজস্র রেকর্ড ভাঙা ও নতুন রেকর্ড গড়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আবসর নিলেন সকলের প্রিয় যুবি।

২০১১ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের সেরা যুবরাজ শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ৩০ জুন ২০১৭-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে।

‘২৫ বছর ২২ গজের চারপাশে ও ১৭ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার। এই খেলা আমাকে লড়াই করতে শিখিয়েছে, পড়তে শিখিয়েছে, ধুলো ঝেড়ে আবার নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যেতে শিখিয়েছে’, এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথাই জানালেন যুবরাজ।


২২ গজের মধ্যে যুবরাজ সবসময়ই তাঁর সেরা খেলা উপহার দিয়েছেন কিন্তু যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তাঁর কেরিয়ারের সেরা পারফরমেন্স কোনটা, তাহলে সবাই এক কথাই বলবে-২০১১ বিশ্বকাপে।

এই বিশ্বকাপে তিনি শুধুমাত্র তাঁর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই লড়াই করছিলেন না, লড়ছিলেন তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সারের সঙ্গেও। এই ৩৭ বছরের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ২০১১ বিশ্বকাপে ৩৬২ রান করেছিলেন যার মধ্যে একটি শতরান ও চারটি অর্ধ-শতরানও রয়েছে। বল হাতে তিনি ১৫টি উইকেটও তুলেছিলেন। চার বার ম্যাচের সেরা হওয়ার সুবাদে তিনি টুর্নামেন্টের সেরা বিবেচিত হয়েছিলেন।

২০১১ সালের বিশ্বকাপের জয়কে উল্লেখ করে যুবরাজ বলেন ‘আমি একটা ইতিহাস অংশ হতে পেরেছি, যা ২৮ বাছর বাদে তৈরি হয়েছিল, আমি এর থেকে আর বেশি কি চাইতে পারি’।

ক্যান্সারকে হারিয়ে তিনি আবার খেলার মাঠে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন কিন্তু তাঁর খেলা আর আগের মতন ছিল না। কিন্তু এতে তাঁর জনপ্রিয়তায় কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি। আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিরা তাঁর প্রতি অগাধ ভরসা রেখেছিল। তাই তো ২০১৪ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তাঁকে ১৪ কোটি টাকায় কেনেন। ২০১৫ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিল্স তাঁকে ১৬ কোটিতে কিনে নেয়।

যুবরাজ তাঁর জীবনে ৪০টি টেস্ট ম্যাচ, ৩০৪টি ওয়ান ডে ও ৫৮টি টি২০ খেলে যথাক্রমে ১৯০০, ৮৭০১ আর ১১৭৭ রান করেছেন। তিনটি ফরম্যাট মিলিয়ে তিনি ১৪৮টি উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন।

যুবরাজের কভার ড্রাইভ যা দিয়ে তিনি ২০১১ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শেষ করেছিলেন আর ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছয় বলে ছটা ছয় ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

যুবরাজ তাঁর পরিবার, সতীর্থদের, কোচিং স্টাফ ও তাঁর খেলোয়াড় জীবনের যাদের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে, সকলকেই ধন্যবাদ জানান। তিনি এখন তাঁর পুরো সময় ক্যান্সার রোগীদের উন্নতির উপর মনোযোগ দেবেন তাঁর ‘ইউউইক্যন’ সংস্থানের মাধ্যমে।