আমিনুর রহমান
অবশেষে ষষ্ঠ সিন্ধুও জয় করে ফেললেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সাঁতারু সায়নী দাস। পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার বাসিন্দা সায়নী এর আগে পঞ্চম সিন্ধু জয় করেছেন। একাধিক পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। এবার জয় করলেন স্পেনের জিব্রাল্টারা প্রনালী। বিশ্বে এই প্রনালী জয়ের গৌরব রইল দুজনের। তার মধ্যে একজন ভারতের সায়নী, অন্যজন আমেরিকার সাঁতারু রিয়ন হিদিকে উৎসুমি। শুক্রবার রাতে সায়নীর ষষ্ঠ সিন্ধু জয়ের পরপরই শনিবার বিভিন্ন মহল থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর পালা শুরু হয়েছে।
দীর্ঘ অনুশীলনের পর সায়নী দাস শুক্রবার ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় স্পেনের তারিফা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন। একই সঙ্গে একই জায়গায় যাত্রা শুরু করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারু রিয়ন উৎসুমি। ওই সময় জলের তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেন্ট্রি গ্রেড। সায়নী তাঁর ষষ্ঠ সিন্ধু জয় করতে সময় নেয় ৩ ঘন্টা ৫১ মিনিট। এটাও একটা রেকর্ড বলে জানা গেছে। ওই সময় সীমায় সে জিব্রাল্টার প্রণালীতে ১৫.১ কিলোমিটার পাড়ি দেয়। যাবতীয় তথ্য পাওয়া গেছে সায়নীর বাবা রাধেশ্যাম দাসের কাছে। গভীর রাতেই সায়নী দাস তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে নেয়। এই জয় ভারতীয় হিসাবে প্রথম। আবার বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বলা চলে।
শুক্রবার সায়নীর কঠিন যাত্রাপথে যাতে সে সুরক্ষিত থাকে তার জন্য কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারি ছিল। সায়নীর বাবা রাধেশ্যাম দাসের কথায়, জলে নামার আগে সে হালকা কিছু খেয়ে নেয়। তারপর তারিফা বন্দরে এসে বেশ কিছুক্ষণ অনুশীলনও করেন। মূল পর্বে যাত্রার আগে দ্রোণাচার্য পুরস্কার প্রাপ্ত সাঁতারু তপন পাণিগ্রাহীর পরামর্শ গ্রহণ করেন। তবে সাঁতারে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর উপর নজরদারি শুরু হয়ে যায়। লাইফবোট নিয়ে সায়নীর পাশাপাশি ছিলেন বিশেষজ্ঞ সাতারুরা। একটি বোর্ডে ছিলেন সায়নীর বাবা এবং দ্রোণাচার্য পুরস্কার প্রাপ্ত সাঁতারু তপন পাণিগ্রাহী।
দেশে ফিরে সায়নী এবার সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষ্যে এগোবেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে পঞ্চম সিন্ধু জয়ের পরই কালনার ” জলকন্যা ” সায়নী দাস কে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। এশিয়া মহাদেশের প্রথম সফল মহিলা সাঁতারু হিসাবে তাঁর ওই পুরস্কার। ক্রীড়া জগতে সাহসিকতার জন্য জাতীয় পুরস্কার পুরস্কার পেয়েই তিনি ঘোষণা করেছিলেন এপ্রিলে ষষ্ঠ সিন্ধু জয় করবেন। এর আগে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে খেলশ্রী সম্মানও জানানো হয়। ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল জয়ের পর একের পর এক চ্যানেল জয় করে চলেছেন সায়নী। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার রটনেস্ট, ২০১৯ সালে আমেরিকার ক্যাটলিনা জয়। তারপর ২০২২ সালে এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসাবে আমেরিকার মলোকাই চ্যানেল জয় করেন। ২০২৪ সালে পর পর দুটি চ্যানেল জয় করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি হলো নিউজিল্যান্ডের কুকস্ট্রেট এবং নর্থ চ্যানেল জয়। বাবা বলেন, আগামী দিনে আরও সফলতা পেতে খুব শীঘ্রই কঠোর অনুশীলন শুরু হবে সায়নীর। তাঁর আগামীর লক্ষ্য জাপান ও তাইওয়ানের মাঝে সুগারু চ্যানেল জয়।