ইংল্যান্ডের আক্রমণের কাছে শুভমনদের অসহায় আত্মসমর্পণ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

হল না। রবীন্দ্র জাদেজার লড়াই ভারতকে বাঁচাতে পারল না। ইংল্যান্ড ২২ রানে জিতল তৃতীয় টেস্টে। জাদেজা ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন। সিরাজ ৪ রানে আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। ভারত ও ইংল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট ম্যাচের শেষ দিন তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে দুই দলের সমর্থকরা গ্যালারিতে অপেক্ষায় ছিলেন। সবার মনের মধ্যেই একটাই কথা বার বার উঁকি দিচ্ছিল। কে জিতবে? লর্ডস মাঠ বলতেই ঐতিহাসিক। এই মাঠেই অনেক অঘটন যেমন ঘটেছে, তেমনই আবার অনেক ম্যাচ স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। ঠিক সেইভাবেই তৃতীয় টেস্টে ভারত ও ইংল্যান্ডের ম্যাচটা সেই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল।

ভাবতে অবাক লাগে, ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৮৭ রানে সবাই আউট হয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই জায়গাতেই আটকে গেল ভারতীয় দল। অর্থাৎ ৩৮৭ রানে ভারতেরও প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায়। তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় কে জিতবে— ভারত নাকি ইংল্যান্ড? দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হতেই ইংল্যান্ড দলের কাঁপুনি শুরু হয়ে যায়। ভারতীয় বোলাররা যেভাবে আঘাত হানতে শুরু করেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ভালো জায়গায় পৌঁছবে না। তাই হল। ভারতের বোলারদের আক্রমণে ইংল্যান্ড শিবিরে ধস নেমে আসে। ইংল্যান্ড ১৯২ রানে ইনিংস শেষ করে। ভারতের সাহসী বোলার যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ ও ওয়াশিংটন সুন্দর যেভাবে বল করেছিলেন, তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মনে কাঁপুনি ধরে গিয়েছে।

তার জবাবে ভারতীয় দলকে জিততে গেলে ১৯৩ করতে হবে। হাতে রয়েছে মাত্র একটা দিন। দ্বিতীয় ইনিংসে গত রবিবার শেষ পর্বে খেলতে নেমে ভারতীয় দলে অবস্থাও বেশ কঠিন হয়ে যায়। মাত্র ৫৮ রানে ৪ উইকেট হারাতে হয়। প্রথম সারির ব্যাটসম্যান হিসেবে যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমন গিল ও করুণ আয়াররা সেইভাবে রান যোগ করতে পারলেন না স্কোরবোর্ডে। শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে লোকেশ রাহুল ৩৩ রানে ব্যাট করছিলেন। সোমবার ওই অবস্থায় খেলতে নেমে ভারতীয় শিবিরেও ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যায়। রাহুলের সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলতে আসেন ঋষভ পন্থ। সেইভাবে ব্যাট চালিয়ে খেলতে পারলেন না ঋষভ। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৯ রান। আর্চারের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন ঋষভ। ভারত তখন ৭১ রানে ৫ উইকেট।


লোকেশের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রবীন্দ্র জাদেজা। অনেকের মধ্যেই আশা ছিল হয়তো এই জুটি ভারতীয় দলকে জেতার লক্ষ্যে নিয়ে যাবে। কিন্তু লোকেশ রাহুল বেন স্টোকের বলে এলবিডব্লু হন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান। খেলেছেন ৫৮টি বল। মেরেছেন ছ’টি বাউন্ডারি। লোকেশ আউট হওয়ার পরে ভারতীয় শিবিরে চিন্তা আরও গাঢ় হয়ে যায়। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে ওয়াশিংটন সুন্দর খেলতে আসলেও, খুব তাড়াতাড়ি ওয়াশিংটন কোনও রান না করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান। এই উইকেটটিও নেন জোফরা আর্চার। জাদেজার সঙ্গে অষ্টম উইকেট জুটিতে খেলতে আসেন নীতীশকুমার রেড্ডি। ধীরে ধীরে রান করার চেষ্টা করছিলেন এই জুটি। কিন্তু সেই আশাও ভঙ্গ হয়ে গেল। নীতীশকুমার ১৩ রান করে ক্রিস ওয়াক্সের বলে ক্যাচ তুলে দেন জেমস স্মিথের হাতে।
ক্রমেই আশার আলো নিভতে চলেছে ভারতীয় শিবিরে। সেই সময় রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যশপ্রীত বুমরা খেলতে আসেন। তিনি মাত্র ৫ রান করে আউট হয়ে যান। তখন ভারতীয় স্কোরবোর্ডে ৯ উইকেটে ১৪৭ রান।