কুস্তির অনূর্ধ্ব-২০ বিভাগে বিশ্বসেরা হরিয়ানার তপস্যা

বুধবার বুলগেরিয়ার সামাকভে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৭ কেজি বিভাগে নরওয়ের ফেলিসিতাস দোমাজেভাকে হারিয়ে বিশ্বসেরা হলেন ভারতের তপস্যা গেহলট। বংশানুক্রমে কুস্তির সঙ্গে যুক্ত, ছোটবেলা থেকেই প্রপিতামহ চৌধরি হাজারি লালের দঙ্গল কাঁপানো গল্প শুনেই বড় হয়েছেন তিনি। সেই গল্পে অনুপ্রাণিত হয়েই শুরু হয়েছিল তাঁর লড়াই। অবশেষে স্বপ্ন সফল হল।

হরিয়ানার ঝাজ্জরের খানপুর কালান গ্রামের মেয়ে তপস্যার সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক অদম্য পারিবারিক সংগ্রাম। ঠাকুরদার দেখানো পথেই কুস্তিগির হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর বাবা পরমেশ গহলোত। জাতীয় স্তরে সাফল্য পেলেও, চোটের কারণে কেরিয়ার থেমে যায়। কিন্তু থামেননি পরমেশ। মেয়েকে কুস্তিগির বানানোর সংকল্পে ভর করে, সমাজের কটাক্ষ সয়ে গিয়েছেন এগিয়ে। পরমেশ বলেন, ‘মেয়ে জন্মানো নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম, মেয়ে হোক বা ছেলে, যে কেউ দেশের গর্ব হতে পারে। আজ তপস্যা বিশ্বজয় করে সেই কথাই প্রমাণ করল।’

২০১৬ সালে স্থানীয় এক অ্যাকাডেমিতে শুরু হয় তপস্যার কুস্তিজীবন। তবে পরিকাঠামোর অভাব ছিল প্রবল। পরমেশ তখন মেয়েকে নিয়ে চলে যান সোনিপতে, কুলবীর রানার আখড়ায়। সেই সময় স্ত্রী নবীনা কুমারী একটু দ্বিধায় থাকলেও পরে স্বামীর পাশে দাঁড়ান। কোচ কুলবীর রানাও মেয়েকে নিজের সন্তানের মতো করে গড়ে তুলেছেন, এমনটাই জানান পরমেশ।


বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে তপস্যা হারিয়েছেন জাপানের সোয়াকা উচিদাকে, যিনি টানা ৪০টি ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন। ফাইনালে পরাস্ত করেছেন দোমাজেভাকে, যিনি ১৫ বছর পর কোনও নরওয়েজিয়ান কুস্তিগির হিসাবে ফাইনালে উঠেছিলেন।
তপস্যা ইতিমধ্যেই রাজ্য ও জাতীয় স্তরে একাধিক পদক জিতেছেন। গতবার তিনি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এ বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও স্বর্ণপদক জয় করেন। এবার তাঁর লক্ষ্য সিনিয়র স্তরে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করা।