দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে তীব্র লড়াই শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা চার উইকেটে ভারতকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল। ভারতের ৩৫৮ রানকে তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ৩৬২ রান তুলে ভারতকে পিছনে ফেলে দিল। অবশ্যই বলতে হবে দুই দলের এই লড়াইটা ছিল অত্যন্ত উপভোগ্য। ভারত যেমন রানের পাহাড় গড়ে তুলেছিল, সেই পাহাড়কে টপকাতে দুরন্ত ম্যাচ খেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই তৃতীয় একদিনের ম্যাচটা দু’দলের কাছে ভাইটাল হয়ে দাঁড়াল।
আবার বিরাট কোহলির ব্যাটে গর্জন। বিরাটের ব্যাট আবার প্রমাণ করল বিশ্বের অন্যতম ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর নামটা লেখা থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে বিরাট কোহলির দুরন্ত ভূমিকা দেখে সবাই উজ্জীবিত। প্রথম এক দিনের ম্যাচে বিরাট কোহলি রাঁচির মাঠে ১৩৫ রান করে ইতিহাস রচনা করেছিলেন। আর দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে আবার তিনি শতরান উপহার দিয়ে ভারতীয় দলকে দারুন জায়গায় পৌঁছে দিলেন। ৯০ বলে তিনি শতরান করেন। শতরান করার মুহূর্তে বিরাট কোহলির সেই চেনা স্টাইল উপভোগ করলেন দর্শকরা। সারা স্টেডিয়াম জুড়ে কোহলি কোহলি ধ্বনিতে উত্তাল হয়ে ওঠে। কোহলি ব্যাট তুলে তাঁর প্রিয় দর্শকদের অভিনন্দন জানাতে ভুল করেননি। এখানকার গ্যালারিতে কোহলির খেলা দেখবার জন্য উপচে পড়েছিল ভিড়। কোহলির শতরান করার পরেই পুরো মাঠ উৎসবের চেহারা নেয়। দর্শকরা মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে বিরাটকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন। বিরাটের এই শতরান ভারতীয় ক্রিকেট দলে নতুন বার্তা পৌঁছে দিল।
প্রথম ম্যাচে ভারতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪৯ রান। আর দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ভারতীয় দল ৫ উইকেটে ৩৫৮ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। বিরাট কোহলির পাশে ঋতুরাজ গায়কোয়াডও শতরান করে নিজের পরিচয়কে নতুনভাবে প্রকাশ করলেন। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ভারতীয় স্কোরবোর্ডে অর্ধশত রান উপহার দিয়েছেন এবং অপরাজিতও ছিলেন। নিঃসন্দেহে ভারতীয় দল ম্যাচ জেতার লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে থাকে। রোহিত শর্মা এদিন সেই অর্থে রান পাননি। এমনকি ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল সেইভাবে রান পাননি। কিন্তু চতুর্থ উইকেট জুটিতে বিরাট কোহলি ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড জুটি ১৯৫ রানের লম্বা ইনিংস খেলেন। ঋতুরাজ একদিনের ক্রিকেটে প্রথম শতরান করার কৃতিত্ব দেখালেন। তিনি ১০৫ রান করার ফাঁকে ১২টি বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কা মেরেছিলেন। আর বিরাট ১০২ রান করকে ৭টি চার ও দুটি ছক্কা মারেন। শতরান করার পরে বিরাট ও ঋতুরাজ আউট হয়ে যাওয়ার পরে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। তিনি ব্যাট হাতে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আর রবীন্দ্র জাদেজা ২৪ রানে নটআউট থেকে যান।
সাউথ আফ্রিকার কাছে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫৯ রান। সাউথ আফ্রিকা দলের হয়ে ডিককে সঙ্গে মাঠে আসেন এ মার্করাম। মার্করাম প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে খেলতে থাকেন। ভারতীয় বোলদের সেইভাবে কোনও পাত্তা দিচ্ছিলেন না তিনি। মার্করাম ১১০ রান করেন ৯৮ বলে। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বার বার বোলার পরিবর্তন করে কোনও লাভের অঙ্ক দেখতে পাননি। অধিনায়ক টেম্বা বাহুমা খেলতে নেমে শক্ত হাতে ব্যাট করছিলেন। অল্পের জন্য তিনি অর্ধশত রান করতে পারলেন না। বাহুমা ৪৬ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান। তবে সাহসী ভূমিকায় দেখতে পাওয়া গেল দক্ষিণ আফ্রিকা দলের খেলোয়াড়দের।