অনন্য নজির গড়ে ফেললেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। ১১ বছর বাদে আইপিএল ক্রিকেটে প্লে-অফ ম্যাচে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে গেল পাঞ্জাব কিংস দল। আইপিএল ক্রিকেটে এই প্রথম কোনও অধিনায়ক তিনটি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে প্লে-অফ খেলার জায়গা করে দিয়েছেন। আর সেই নজিরই গড়লেন এবারে পাঞ্জাব কিংস দলের অধিনায়ক হিসেবে শ্রেয়স আইয়ার। গতবছর কলকাতা নাইটরাইডার্স দলে অধিনায়ক হিসেবে শুধু প্লে-অফ ম্যাচ নয়, ফাইনালে বাজিমাত করেছিলেন। আবার ২০১৯ ও ২০ সালে শ্রেয়স দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ছিলেন। ২০২০ সালে দিল্লি ফাইনাল খেলেছে দিল্লি শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বে। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালেও প্লে-অফ ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব দেখিয়েছিল দিল্লি শ্রেয়সের হাত ধরেই। দিল্লি ফাইনাল খেললেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। কিন্তু কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন শ্রেয়স।
কিন্তু এবারে মেগা নিলামে শ্রেয়সকে ছেড়ে দেয় কলকাতা। ছেড়ে দেওয়ার পিছনে কোনও কারণ অবশ্য জানা যায়নি। ওই নিলামে ২৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দিয়ে পাঞ্জাবের মালকিন প্রীতি জিনটা শ্রেয়স আইয়ারকে কিনে নেন। আর দলের কোচ হিসেবে মনোনীত করা হয় রিকি পন্টিংকে। অর্থাৎ পাঞ্জাব দলে শ্রেয়স আইয়ার অধিনায়ক হওয়ার পর কোচ রিকি পন্টিংকে পেয়ে পুরনো জুটি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যান। ২০১৯-২০ সালে কোচ ও অধিনায়ক হিসেবে দিল্লি দলে জুটি ছিলেন রিকি পন্টিং ও শ্রেয়স আইয়ার। শ্রেয়স আইয়ার এবারে পাঞ্জাব কিংসকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। ইতিমধ্যে পাঞ্জাব ১২টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। আটটি ম্যাচে জয় পেলেও পাঞ্জাব তিনটি ম্যাচে হেরে যায়। আর একটি ম্যাচ বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত হয়। পাঞ্জাব ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
এবারের আইপিএল ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে রয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। ১২ ম্যাচে তিনি ৪৩৫ রান করেছেন। পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার চারটি অর্ধশতরান করেছেন। আর একটা ম্যাচে মাত্র ৩ রানে শতরান থেকে বঞ্চিত হন। তাঁর ব্যাট যেভাবে কথা বলছে, তা অবশ্যই মনে রাখার মতো। সেই কারণেই হয়তো প্রথমবার আইপিএল ক্রিকেটে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে পাঞ্জাব দল। যদি পাঞ্জাব চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, তাহলে অধিনায়ক হিসেবে দুটো দলকে চ্যাম্পিয়ন করার নজির গড়বেন।
ঠিক তার উপরেই অবস্থান করছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরু ১২ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট পেয়েছে। তারাও আটটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে আর তিনটি ম্যাচে হেরেছে। আর একটি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হয়েছে। এই দুই দলের পয়েন্ট এক থাকলেও রান রেটের ভিত্তিতে বেঙ্গালুরু দল দ্বিতীয় স্থানে জায়গা পায়। গুজরাত টাইটান্স এই মুহূর্তে ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন, প্লে-অফ ম্যাচ খেলার জন্য চতুর্থ দল হিসেবে কাকে দেখা যাবে? নিঃসন্দেহে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এই দৌড়ে ভালো জায়গায় রয়েছে। তারা ১২টি ম্যাচ খেলে সাতটি ম্যাচে জয় পেলেও পাঁচটি ম্যাচে হারতে হয়েছে। তাদের সংগ্রহে ১৪ পয়েন্ট। তার ঠিক নিচেই অবস্থান করছে দিল্লি ক্যাপিটালস। দিল্লি ১২ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। এই ক’টি দলেরও ১২টি করে ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে। তাদের আর মাত্র দু’টি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে। কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যদি না যেত, তাহলে অজিঙ্কা রাহানেদের ক্ষীণ আশা জিইয়ে থাকত প্লে-অফের জন্য। কিন্তু তা সম্ভব হল না। দুই দলই একটা করে পয়েন্ট পেয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতা ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেয়েছে। কিন্তু ঋষভ পন্থের লখনউ সুপার জায়ান্টস এখনও আশায় বুক বেঁধে রয়েছে। রবিবারের পরে লখনউ ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। অবশ্য তাদের তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। যদি তিনটি ম্যাচে তারা জিততে পারে, তাহলে লখনউ প্লে-অফ ম্যাচ খেলার একটা সম্ভাবনা তৈরি করবে।
এবারের আইপিএলের লিগ টেবলে চোখ রাখলে স্পষ্ট বোঝা যাবে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রাজস্থান রয়্যালস ও চেন্নাই সুপারকিংসের কোনও সম্ভাবনাই নেই প্লে-অফ খেলার। এবারে একেবারে তলানিতে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। তাদের ইতিমধ্যেই ১২টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। তাদের সংগ্রহে মাত্র ৬ পয়েন্ট। পাশাপাশি রাজস্থান ১৩টি ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটের জন্য চেন্নাইয়ের থেকে একধাপ উপরে রয়েছে। হায়দরাবাদ ১১টি ম্যাচ খেলে তাদের সংগ্রহে ৭ পয়েন্ট। কিন্তু এখানেও বলতে দ্বিধা নেই, হায়দরাবাদ তিনটি ম্যাচে যদি জয় পায়, তাহলে তারা ১৩ পয়েন্টে শেষ করবে খেলা।