সুপার কাপ ফুটবলের শুরুটা সেই অর্থে ইস্টবেঙ্গলের ভালো হল না। আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হেরে গিয়ে, জয়ের পথে ফিরতে সুপার কাপকেই বেছে নিয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। কিন্তু তা হল না। এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত অস্কার ব্রুজোর ইস্টবেঙ্গল ২-২ গোলে ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের সঙ্গে খেলা শেষ করল। বেশ কিছুদিন বাদে ডেম্পো আবার ফুটবলে ফিরে এসেছে। একটা সময় ডেম্পো দল ভারতীয় ফুটবলে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল শনিবার যে খেলাটা খেলল, তাতে দর্শকদের খুশি করতে পারেনি। প্রথম গোলটি হয় একেবারে ভুল আউটিংয়ের জন্য। আর দ্বিতীয় গোলটি করার ক্ষেত্রে কোনও দিশা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই কোচ অস্কার ব্রুজো সাইড লাইনের ধারে গিয়ে বারবার ফুটবলারদের নির্দেশ দিচ্ছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশেও খেলার চেহারা বদলে যায়নি। বরঞ্চ ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের সেই সুদিন নেই। ইস্টবেঙ্গল দলে বিদেশি ফুটবলাররা খেলছেন, কিন্তু ডেম্পো ক্লাবের দল গঠন করা হয়েছে স্বদেশীদের নিয়ে। ডেম্পো পিছিয়ে পড়েও খেলায় ফিরে এসে অমীমাংসিতভাবে মাঠ ছাড়ে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, শিল্ডের ফাইনালে টাইব্রেকারে গোলরক্ষক দেবজিত মজুমদারের হাত বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের শট বাঁচাতে পারেনি। আর এদিন একই অবস্থায় দেবজিতকে দেখতে পাওয়া গেল খেলার মধ্যে। একটা সময় কোচ অস্কার ব্রুজোর ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন লাল-হলুদের গোলরক্ষক দেবজিত। তিনি যেভাবে গোলের বাইরে এসে খেলতে শুরু করেছিলেন, তা দেখে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। তাই জাপানি ফুটবলার হিরোশি যে ভূমিকা নিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল জয়ের হাসি হাসবে। কিন্তু সেই ভাবনা সার্থক হল না।
একটা সময় লাল-হলুদ খেলোয়াড়রা আক্রমণে গতি বাড়িয়ে ডেম্পোর রক্ষণভাগকে এলোমেলো করে দিয়েছিলেন, তবে সেই সুযোগে গোলের মুখ খুলতে পারেননি। সুপার কাপে খেলতে এসে প্রথমেই গোল পেয়ে গেলেন মিগুয়েল। ইস্টবেঙ্গলের মিগুয়েলের জোরালো শট ডেম্পোর গোলের জালকে কাঁপিয়ে দেয়। প্রথম গোলটা নাওরেম মহেশ গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ডেম্পোর মহম্মদ আলি গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন। ব্রাজিলের ফুটবলার মিগুয়েলের গোলে ইস্টবেঙ্গল আবার এগিয়ে যায়। তখনও বুঝতে পারা যায়নি, ইস্টবেঙ্গলকে ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে। বরঞ্চ পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে ডেম্পোর খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রকাশ করতে থাকেন।
দ্বিতীয় পর্বে খেলতে নেমেছিলেন মিগুয়েল। লালচুংনুঙ্গা ও মিগুয়েল দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়ায়া দারুণ ছিল। যার ফলে ইস্টবেঙ্গলের খেলার মধ্যে একটা ছন্দ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। তবে খেলার ৮৮ মিনিটের মাথায় ডেম্পোর রানে গোল করে আবার খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন। এক্ষেত্রে গোলরক্ষক দেবজিতকে দেখা গেল বোকার মতো গোলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। দেবজিতের ভুলেই ইস্টবেঙ্গল জয়ের মুখ দেখতে
পেল না।