অলিভিয়া সরকার
কলকাতা ফুটবল লিগের একটা রুদ্ধশ্বাস ডার্বি ম্যাচের সাক্ষী হয়ে রইল শনিবার কল্যাণী স্টেডিয়াম। দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস মুখোমুখি হবার অর্থই উন্মাদনার ঝড়। ইস্টবেঙ্গলের ঝড়ে বেসামাল হয়ে গেল মোহনবাগানের তরী। লাল হলুদ ব্রিগেড ৩-২ গোলে মোহনবাগানকে উড়িয়ে দিয়ে জয়ের হাসি হাসল। টান টান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে খেলা শেষ হতেই কল্যাণীর পথে শুধুই লাল হলুদ আবিরের ছড়াছড়ি। আনন্দে আত্মহারা লাল হলুদ সমর্থকরা। কাগুজে মশাল জলে উঠল গ্যালারিতে। ইস্টবেঙ্গলের জয়ের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠল।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে জয়ের জন্য যথেষ্ট মরিয়া মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সৈনিকরা। আক্রমণের ঝড়ে মোহনবাগান রক্ষণভাগ ভেঙেচুড়ে একাকার হয়ে যায়। খেলার ৯ মিনিটে মাথায় ইস্টবেঙ্গলের সম্মিলিত আক্রমণ থেকে দারুন গোল করেন জেসিন টিকে। গোল করার পরেই জেসিন চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে চলে যান। গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা কিছুটা মনমরা হয়ে যান। জেসিনকে তাঁরা আর আক্রমণে এদিন দেখতে পাবেন না বলে সবার মুখ ম্লান হয়ে যায়। পিছিয়ে থাকা মোহনবাগানের ফুটবলাররা আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টায় সফল হতে পারেননি। তবে ৩০ মিনিটের মাথায় কিয়ান নাসিরির একটা শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। বরঞ্চ পাল্টা আক্রমণে আবার মোহনবাগানের শিবিরে ধাক্কা দিতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের সায়ন ব্যানার্জি ও ডেভিডরা যেভাবে ক্ষুরধার আক্রমণে মোহনবাগান রক্ষণভাগ দিশাহারা হয়ে যায়। সেই অবসরে দুরন্ত গোল করে সায়ন ব্যানার্জি দুরন্ত গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন। তারপরেও ডেবিড বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। ডেভিড যদি গোলগুলি করতে পারতেন তাহলে খেলার প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব দেখাতে পারতেন।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় মোহনবাগান। সেই লক্ষ্যে বেশকিছু আক্রমণ তুলে আনে ডেগি কর্দোজোর ফুটবলাররা। সেই আক্রমণে ৫৩ মিনিটে মোহনবাগানের হয়ে খেলার ব্যবধান কমান লিওয়ান কাস্তানা। প্রথম গোলটি করার পরেই ম্যাচে ফিরতে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। খেলার ৬৭ মিনিটে সমতা ফেরান সবুজ মেরুনের কিয়ান নাসিরি। কিন্তু এই অবস্থান বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দুই মিনিট বাদেই ডেভিডের গোলে আবার ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায়। দুই দলই জেতার লক্ষ্যে আক্রমণ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু কোনও আক্রমণ থেকেই আর গোল আসেনি। খেলার শেষ মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলের আমন সি কে লালকার্ড দেথেন। অবশ্য খেলার ফলাফলে কোনওরকম পরিবর্তন হয়নি। রুদ্ধশ্বাস লড়াই
শেষে ইস্টবেঙ্গল ৩-২ গোলে মোহনবাগানকে হারিয়ে বাজিমাত করল। এদিন ম্যাচের সেরা পুরস্কারে সম্মানিত হলেন লাল হলুদের সায়ন ব্যনার্জি।
তবে এদিন খেলার মাঠ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল। এই ধরনের ম্যাচে মাঠ যদি খেলার উপযোগী না হয় সেখানে ফুটবলারদের চোট হবেই। তা থেকে ছুটি পেল না কল্যাণী স্টেডিয়াম। আবার আলো নিভে যাওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ ছিল শেষের দিকে। দেখা গেল অনেকেই টিকিট না পেয়ে ঠাঁই নেন কাছের ফ্যানপার্কে।