হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে বাজিমাত করল মোহনবাগান

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড বলতেই আলাদা একটা আবেগ সব সময়ই ফুটবলপ্রেমীদের কাছে। শতাব্দী প্রাচীন এই শিল্ডের রঙ এখন অনেকটাই মরচে পড়ে গিয়েছে। তবুও শিল্ড ফাইনালে যদি মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ও ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি হয়, সেই ডার্বি ম্যাচের উত্তেজনা স্বাভাবিকভাবেই অন্য স্তরে পৌঁছে যায়। তারই ছবি শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দেখতে পাওয়া গেল। টানা নির্দিষ্ট সময়ই দুই দলই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করল। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ৫-৪ (৬-৫) গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে শিল্ড ফাইনালে বাজিমাত করল। দুই দলই এক এক গোলে খেলা শেষ করে নির্দিষ্ট সময়। ওই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। খেলার তিন মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের দুর্গে আঘাত হানেন লাল হলুদের বিপিন সিং। কিন্তু মোহনবাগানে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা সতর্ক থাকায় গোল হয়নি। তার এক মিনিট বাদে ইস্টবেঙ্গলের গোল বক্সের মধ্যে লিস্টন কোলাস বল পেয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। সাত মিনিটের মাথায় কামিন্সের পাশ থেকে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাকেলারেন।

কিন্তু সজাগ ছিলেন লাল হলুদের গোলকিপার গিল। কোনও বিপদ হয়নি। ১৯ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলে মহেশ নওরেম দূরপাল্লার শট নেন। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশাল কাইফ তা বাঁচিয়ে দেন। ৩২ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান পেনাল্টি পেয়েছিল কিন্তু সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন জেসন কামিন্স। ৩৫ মিনিট তখন খেলা গড়িয়েছে। বাঁ প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করে বল নিয়ে বক্সের কাছে পৌঁছে যান মহেশ। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অরক্ষিত অবস্থায় হামিদ। হামিদ বল পেয়েই মোহনবাগানের গোলের জালে বল জড়িয়ে দেন। ইস্টবেঙ্গল ১-০ গোলে এগিয়ে যাবার পরে আরও বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে সবুজ মেরুন ব্রিগেডে রক্ষণভাগে ঝড় তুলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ৪২ মিনিটের মাথায় আবার হামিদ গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। ত্রিফলা আক্রমণ গড়ে তুলে ছিলেন মহেশ, রশিদ ও হামিদ। প্রথমার্ধে তিন মিনিট সংযুক্ত সময় মোহনবাগান আক্রমণ গড়ে তোলে। ডানদিক থেকে সাহালের ভাসানো বল পেয়ে যান লিস্টন। পাশেই ছিলেন আপুইয়া। তাঁর শট বারে লেগে ড্রপ খেয়ে বেরিয়ে আসে। বল গোল লাইন পার হয়ে যাওয়ায় লাইন্সম্যান পতাকা তুলে রেফারিকে নির্দেশ দেন গোল। রেফারি তা মেনে নেন। খেলার প্রথমার্ধে দুই দলই একটি করে গোল করে।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল আবার আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ সামলাতে গিয়ে আলবার্তোকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি ভেঙ্কটেশ। তারপরই ইস্টবেঙ্গল অ্যাডমুন্ডকে পরিবর্তন করে মাঠে আসেন পিভি বিষ্ণু। মোহনবাগান দ্বিতীয়পর্বে ৪ মিনিট সংযুক্ত সময় মোহনবাগান আবার আক্রমণের গতি বাড়ায়। নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে রবসনের ফ্রিকিক থেকে হেড করেন মেহেতাব সিং কিন্তু তা বাঁচিয়ে দেন লাল হলুদ গোলরক্ষক গিল কোনক্রমে বাঁচিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। মোহনবাগান ৫-৪ গোলে টাইব্রেকারে জয় তুলে নেয়। যার ফলে মোহনবাগান ৬-৫ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতে নিল ।