পরপর দুটি টেস্টে হারের পরে ভারতের কাছে অত্যন্ত মর্যাদার লড়াই বলতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একদিনের ম্যাচ। তাই রাঁচিতে মাঠে চ্যালেঞ্জ বলতে ভারতের দুই তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার উপরেই ভরসা রাখতে হল। সেই চ্যালেঞ্জে বাজিমাত করল ভারত। জিতল ১৭ রানের ব্যবধানে। বলতে দ্বিধা নেই বিরাট ও রোহিতের দুরন্ত ব্যাটিংকে হাতিয়ার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিল প্রথম একদিনের ম্যাচে ভারত।
একেই বলে পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। দীর্ঘদিন বাদে মাঠে নেমে বিরাট কোহলি ও রাহিত শর্মার দাপট দেখে দিশা হারিয়ে ফেললেন প্রতিপক্ষ দলেসর বোলাররা। ব্যাটের ধামকা কাকে বলে তা দেখতে পাওয়া গেল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম একদিনের ম্যাচে। ধোনির শহরে রবিবাসরীয় ক্রিকেটে ভারতের দুই তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার ঝোড়ো ব্যাটিং দেখে দর্শকরা অভিভূত। যার সুবাদে ভারতীয় দল ৩৪৯ করে ৫০ ওভারে। যখন বিরাট কোহলি আউট হন তখন সারা স্টেডিয়ামের দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাতে ভুল করেননি। এমনকী দক্ষিণ অফ্রিকার ক্রিকেটাররা বিরাট কোহলিকে প্রশংসা করে বলেন সাবাস। বিরাট কোহলি শুধু শতরান করলেন না পাঁচটি নজির গড়ার কৃতিত্ব দেখান। বিরাট কোহলির ঐতিহাসিক শতরানের মধ্যে দিয়ে রানের পাহাড় গড়ে ভারত। ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লোকেশ রাহুল। এখানে উল্লেখ করা যায় ভারতের তরুণ ব্রিগেড উপভোগ করলেন বিরাট কোহলি রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটিংয়ের দাপট।
টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। তরুণ ক্রিকেটাররা পুরোপুরি ব্যর্থ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কীভাবে ভারতীয় দলের ভিত শক্ত করতে হয় তা দেখিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। ভারতের হয়ে ওপেন করতে আসেন যশস্বী জয়সওয়াল ও রোহিত শর্মা। যশস্ব ১৬ বলে ১৮ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান। তারপরে রোহিতের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বিরাট কোহলি। এই দুই তারকা ব্যাটসম্যানের ব্যাটে রানের ফুলঝুরি দেখতে পাওয়া যায়। রোহিত ৫৭ রান করে আউট হন। দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে ১৩৬ রান আসে। রোহিত ৫৭ রান করার ফাঁকে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন।
কোহলির সঙ্গে খেলতে নামেন তৃতীয় উইকেটে ঋতুরাজ গাইকোয়াড। কিন্তু ঋতুরান ৮ রান করে আউট হয়ে যান। অবিচল কোহলি দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের কোনও পাত্তাই দেননি। মাঠের চারিদিকে বল পাঠিয়ে ভারতের স্কোরবোর্ডকে উজ্জ্বল করতে থাকেন বিরাট কোহলি। ওয়াশিংটন সুন্দরও খুব তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যান। তিনি করেন মাত্র ১৩ রান। এবারে কোহলির সঙ্গী হোন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। এই জুটি সাহসের সঙ্গে রান করে ভারতকে সমৃদ্ধ করতে থাকেন। কোহলি ১০২ রানে ১৩৫ রান করে ড্রেসিং রুমে ফেরত যান কোহলি। সারা মাঠের দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে কোহলিকে অভিনন্দন জানান। এমনকী ড্রেসিং রুমে কোচ গৌতম গম্ভীর বুকে জড়িয়ে নেন কোহলিকে। কোহলি বুঝিয়ে দিলেন এখনও ভারতীয় দলে অপরিহার্য ক্রিকেটার তিনি। হয়তো বোর্ডের পক্ষ থেকে অনুরোধ আসতে পারে বিরাট ও রোহিত অবসর ভেঙে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসুন। চাপের মুখে কীভাবে ঘুর দাঁড়াতে হয় তা দেখিয়ে দিলেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। অসাধারণ একটা ইনিংস উপহার দিলেন তিনি। রাহুলের ব্যাট থেকে আসে ৬০ রান। খেলেছেন ৫৬টি বল। একেই বলে একদিনের ক্রিকেট। দ্রুতগতি রান করাটা হল ক্রিকেটারদের লক্ষ্য। আর তারপরে শক্ত হাতে ব্যাট করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁরা ব্যাট থেকে ৩২ রান। বলেতে দ্বিধা নেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারত রানের পাহাড় গলে অনেকটাই এগিয়ে থাকে। নিঃসন্দেহে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানো দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে বেশ কঠিন।