শক্তিশালী ইরানের কাছে হেরে গেল ভারত

২০২৫ কাফা নেশনস কাপে ভারতীয় দল প্রথম ম্যাচে দুরন্ত জয় তুলে নিয়েছিল তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে। সেই জয়ের পর ভারতীয় দল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে ওঠে। স্বাভাবিকভাবে দলের নতুন কোচ খালিদ জামিল দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী ইরানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আলাদা ছক করেছিলেন। তবে সেই ছক কোনওভাবেই বাস্তবে রূপ পেল না। ইরান ৩-০ গোলে হারিয়ে দিল ভারতকে। ফিফা ক্রমতালিকায় ইরান থেকে ১২২ ধাপে পিছিয়ে রয়েছে ভারত। স্বাভাবিকভাবে এশিয়ার সেরা ইরানের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা ভারতের কাছে খুবই সহজ ছিল না।

কিন্তু খেলার প্রথম ৪৫ মিনিট ভারতীয় দল যেভাবে ইরানের সঙ্গে টক্কর দিয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। খেলার শুরু থেকেই ইরান অনেক বেশি আক্রমণের ঝড় তুলেছে। খেলার পাঁচ মিনিটেই একটি দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন। এমনকি ইরান একের পর এক কর্নার ও ফ্রিকিক পেয়ে গিয়েছিল। গোল করার সুযোগ তৈরি করলেও ভারতের রক্ষণভাগের তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়েছে। খেলার ২২ মিনিটে মেহেদি একটি দুরন্ত দূরপাল্লার শট করেন। সেই শটটি কোনওক্রমে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক গুরপ্রীত। আবার ৩৬ মিনিটের মাথায় ইরান গোল করার জন্য সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু তার আগেই ভারতের ডিফেন্ডাররা ব্যারিকেড তৈরি করে তা ফেরত পাঠিয়ে দেন।

আসলে ভারতের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা চেষ্টা করেছিলেন, যেভাবেই হোক, ইরানের রক্ষণভাগকে ভেঙে ফেলতে হবে। কিন্তু সেই ভাবনা কোনও সময়ের জন্যই সার্থক রূপ পায়নি। বরঞ্চ ইরানের আক্রমণকে ভেস্তে দেওয়ার জন্য ভারতের রক্ষণভাগের কোনও কোনও সময় ন’জন খেলোয়াড়কে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তারই মধ্যে একটি পাল্টা আক্রমণে বিক্রমপ্রতাপ সিং ও আসিক কুরিয়ান গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। বরঞ্চ খেলার প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে ইরোনের খেলোয়াড়রা আবার চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন ভারতীয় শিবিরে। তা কোনওক্রমে সামাল দেন সন্দেশ জিঙ্ঘল ও আনোয়ার আলি। খেলার প্রথমার্ধে কোনও পক্ষই কোল করতে পারেনি।


কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ভারতীয় দলের রক্ষণভাগের ভুলে গোল হজম করতে হয়। দ্বিতীয় পর্বে ইরানের ফুটবলাররা যেভাবে ভারতীয় শিবিরকে তছনছ করে দিয়েছেন, তা খেলার ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা কোনওভাবেই ইরানের আক্রমণকে বানচাল করতে পারেননি। বরঞ্চ এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় ইরানের আমির হোসেন গোলবক্সের মধ্যে প্রবেশ করে দারুণ গোল করেন। ৭৩ মিনিটের মাথায় ইরান দু’জন খেলোয়াড়কে পরিবর্তন করে আক্রমণের তেজ আরও বাড়িয়ে দেয়। কোচ খালিদও আসিকের জায়গায় ছাংতেকে মাঠে নামান। নির্ধারিত সময়ে ১ মিনিট আগে ইরান দ্বিতীয় গোলটি করে। গোলটি করেন জাহানকখশ।

দ্বিতীয় পর্বের সংযুক্তি সময়ে ইরানের পক্ষে তৃতীয় গোলটিও করেন জাহানকখশ। জাহানকখশকে রুখে দিতে এগিয়ে এসেছিলেন গোলরক্ষক গুরপ্রীত। কিন্তু তার আগেই তিনি বলটি ক্লিয়ার করে গোলের জালে ঠেলে দেন। স্বভাবিকভাবেই ইরান দু’টি ম্যাচ জিতে গ্রুপ শীর্ষে থেকে ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করে নিয়েছে। ভারতকে শেষ ম্যাচ খেলতে হবে ৪ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।