আসলে অভিষেক টেস্ট ম্যাচ বলতেই ভারতের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ জিততেই হবে এমন প্রতিজ্ঞা নিয়ে শনিবার মাঠে নামতে হবে ভারতীয় দলকে। সিরিজ যাতে হাত বদল না হয় তার জন্যে কোচ গৌতম গম্ভীরের ব্রিগেডকে রনংদেহী ভূমিকা নিতে হবে। ম্যাচ জেতা ছাড়া আর অন্য কোনও ভাবনা নেই ভারতীয় শিবিরে। প্রথম টেস্ট ম্যাচে ভারতেকে হারতে হয়েছে ইডেন উদ্যানে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। সেই হারকে ভারতকে লজ্জিত করছে। তাই দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ভারতের কাছে অত্যন্ত মর্যাদার লড়াই। মনে রাখতে হবে এই অগ্নিপরীক্ষায় জ্বলে উঠতেই হবে অধিনায়ক ঋষভ পন্থদের। শনিবার বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে খেলার প্রথম দিন থেকে ভারতকে অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্যে।
চোটের কারণে দলে নেই শুভমন গিল। ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যে ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ঋষভ পন্থের হাতে। আসলে অভিষেক টেস্ট ম্যাচকে ঐতিহাসিক রূপ দেওয়ার জন্যে ক্রিকেট সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাই ভারত এই ম্যাচটা জিতে আসমের ক্রিকেট প্রেমীদের উৎসর্গ করতে চায়। হয়তো সেই কারণে ভারতীয় ক্রিকেটাররা অনুশীলনে দারুন সিরিয়াস ছিলেন। অনেক সময় ধরে নেটে সবাই ব্যস্ত ছিলেন ব্যাট ও বল করতে। মাঝে মধ্যেই কোচ গৌতম খেলোয়াড়দের ডেকে কিছু পরামর্শ দেন। ভারতীয় দলে অবশ্যই পরিবর্তন আসছে। শুভমন যখন খেলছেন না তাই ওই জায়গাটা ভরাট করতে সাই সুদর্শনকে ডাকা হয়েছে। অধিনায়ক ঋষভ পন্থ চাইবেন, দলের প্রত্যেক সদস্যই সেরা খেলা উপহার দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দিতে হবে। তবুও কোচ গম্ভীর প্রথম একাদশ ঘোষণা করবেন শনিবারের উইকেটের চরিত্র প্রত্যক্ষ করবার পরে। টেস্ট ক্রিকেটে দেশের ৩৮তম অধিনায়ক হিসেবে নাম লেখা হল ঋষভ পন্থের। পাশাপাশি এমএস ধোনির পরে উইকেটরক্ষক হিসেবে অধিনায়ক হলেন ঋষভ পন্থ।
তবে ভারতীয় একাদশ ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়ালকে দেখতে পাওয়া যাবে। ইডেনে প্রথম টেস্ট ম্যাচে যশস্বী রান পাননি। একটা ম্যাচে ব্যর্থ হলে তিনি বাদের তালিকায় চলে যাবেন তা কখনও হয় না। তাই গুয়াহাটিতে ভারতীয় দলের ওপেনার হিসেবে যশস্বীকে রেখে সঙ্গী হবেন লোকেশ রাহুল। লোকেশ এখন ভারতীয় দলে অপরিহার্য ক্রিকেটার। ইডেন উদ্যানে কঠিন উইকেটে দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে অবশ্যই ভারতীয় দলকে এগিয়ে রাখতে পারবেন বলে বিশ্বাস রাখাই যায়। তিন নম্বরে খেলতে আসবেন সাই সুদর্শন তিনি টেস্ট ক্রিকেটে বড় সাফল্য না পেলেও কোচ গম্ভীর নির্ভর করেছেন শুভমন গিলের পরিবর্তে সাই সুদর্শনের উপরে। আশা করা যায় তিনি প্রত্যয়ী ভূমিকায় নিজেকে প্রমাণ করবেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিশেষ নজর কাড়ায় কোচের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন ধ্রুব জুরেল। তিনি উইকেটরক্ষক হলেও, ব্যাটসম্যান হিসেবে ভারতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন।
চার নম্বরে মাঠে নামবেন ধ্রুব জুরেল। তাঁর ব্যাটে এবারে রান আসবে বলে সবাই মনে করছেন। আর পাঁচ নম্বরে মাঠে নামবেন অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। ঋষভ সেরা খেলা খেলতে মানসিক দিক থেকে প্রস্তুত। দলের অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দরকে ছয় নম্বরে খেলতে দেখা যাবে। ওয়াশিংটন সুন্দর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে চান। রবীন্দ্র জদেজা সেরা অলরাউন্ডারদের মধ্যে অন্যতম। ভারতের ভরসা বলতে রবীন্দ্র জাদেজা এগিয়ে থাকবেন। অক্ষর প্যাটেলের পরিবর্তে আসতে পারেন নীতীশ রেড্ডি। নীতীশকে দলে রাখার অর্থ গুয়াহাটির উইকেটে জোরে বল করে বিপক্ষ শিবিরকে চিন্তায় ফেলা বোলার কুলদীপ যাদব ইডেনে সফল হয়েছেন। তাঁর বলে দক্ষিণ অফ্রিকার ক্রিকেটাররা সহজভাবে খেলতে পারছিলেন না। তাই কোচ গম্ভীর বিশেষ অস্ত্র হিসেবে কুলদীপকে ব্যবহার করবেন বলে বিশ্বাস। বিশ্বের সেরা পেসারদের মধ্যে অন্যতম যশপ্রীত বুমরা। বুমরা বলে যে কোনও সময়ে আঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারেন। তাই ভারতীয় শিবিরে তিনি তুরুপের তাস। আর বুমরার সঙ্গে বোলিংয়ে জুটি বাঁধবেন মহম্মদ সিরাজ।
এখনও পর্যন্ত ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৪টি টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। তারমধ্যে ১৬টি ম্যাচে ভারত জিতেছে। আর ১৮টি ম্যাচে দক্ষিণ অফ্রিকা জয়ের হাসি হেসেছে। ১০টি ম্যাচে কোনও ফয়সালা হয়নি। তাই গুয়াহাটির ম্যাচ ভারতের কাছে চ্যালেঞ্জ।