আজ এশিয়া কাপ ক্রিকেটে মহারণ। ক্রিকেটের রণক্ষেত্রে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। গত বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত আবার খেতাবল তুলে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে। ইতিমধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। ভারতের নতুন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের কাছে বড় লড়াই পাকিস্তানের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়া। আবার পাকিস্তানের অধিনায়ক চেষ্টা করবেন কীভাবে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে চাপের মধ্যে রেখে দেওয়া যায়। তাই হাই ভোল্টেজ ম্যাচে লড়াইটা কোন জায়গায় পৌঁছবে, তা আগাম ভাবনা কারওর কাছেই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ভারতের তরুণ ব্রিগেড যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে জানে। তাই বিরোধী দল যত শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো মানসিকতা ভারতীয় শিবিরে সবসময়ই খেলা করে। তাই জোর গলায় বলতে পারা যায়, অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের দক্ষতা প্রকাশে কখনওই পিছিয়ে থাকেন না। হয়তো অনেকেই বলবেন, কিছুদিন আগে সূর্যকুমারকে সেইভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি। কিন্তু অধিনায়ক জানেন কোনও সময় ঝলসে উঠতে হয়। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইটা অবশ্যই অন্যভাবে প্রকাশ করতে চাইবেন। পাকিস্তান দলের স্পিনার আবরার আহমেদ তাদের কাছে বড় ভরসা। ওমানের বিরুদ্ধে তিনিও কিন্তু নজর কাড়তে পারেননি। তাই তিনি চেষ্টা করবেন কামব্যাক করতে। এশিয়া কাপে ভারতের সহঅধিনায়ক যখন অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন শুভমন গিল তখন তিনি একেবারে অনভিজ্ঞ অধিনায়ক হিসেবে যেভাবে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন, সেই ভরসাতেই সূর্যকুমাররা নতুন আশার ছবি দেখছেন। তবে, পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদির সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করবেন, সেটা দেখার বিষয়। ভারতের সেরা বোলারদের মধ্যে অন্যতম যশপ্রীত বুমরা যে কোনও মুহূর্তে পাকিস্তানের কাছে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে বুমরা একটা উইকেট পেলেও ভারতের কাছে তিনি কিন্তু বড় ভরসা। পাশাপাশি, কুলদীপ যাদব যেভাবে প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষের পাঁচটি উইকেট ভেঙে দিয়েছেন, যার ফলে ভারতের জয় সুনিশ্চিত সেখানেই হয়ে গিয়েছিল। তাই কুলদীপ, বুমরা ও হার্দিক পাণ্ডিয়ারা কী করবেন রবিবারের মহারণে, তা দেখার বিষয়। পাকিস্তানের সাইম আয়ুব বড় শক্তি। অবশ্যই তাঁকে সমীহ করে খেলতে হবে ভারতের ব্যাটসম্যানদের। আবার দুবাইয়ের উইকেটে মহম্মদ হ্যারিস অবশ্যই ভালো বল করেছেন প্রথম ম্যাচ ওমানের বিরুদ্ধে। তিনি হয়তো ভারতীয় শিবিরকে চাপে রাখার একটা চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে পাকিস্তান দলে চোট সারিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ফখর জামান। তাঁর হাতে ভালো মার আছে। কিন্তু কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণি বলে তিনি নিজেকে কীভাবে উইকেটে ধরে রাখতে পারবেন, সেটা কিন্তু চিন্তা থাকবে।
বলতে দ্বিধা নেই, শিবম দুবে প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়ে নিয়েছেন। অভিষেক শর্মা ওপেনার হিসেবে ভালো জায়গায় রয়েছেন। এ বাদে তিলক ভার্মা, বরুণ চক্রবর্তী, আর্শদীপ সিং ও সঞ্জু স্যামসনরাও প্রস্তুত রয়েছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেরা খেলা উপহার দেওয়ার জন্য। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা ভারতীয় দলকে যতই চ্যালেঞ্জের মুখে খেলার চেষ্টা করুক না কেন, সব দিক দিয়ে বলতে পারা যায়, সূর্যকুমাররা কোনওভাবেই রণক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে আসবেন না। লড়াই করে প্রমাণ করে দিতে চাইবেন, ভারত জয়ের হাসি হাসতে জানে। ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর মনে করেন, দলে যাঁরা প্রথম একাদশে জায়গা পান, তাঁরা প্রত্যেকেই ভালো খেলার জন্য প্রস্তুত থাকেন। অনেকে হয়তো বলবেন, ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের জন্য সেরা খেলোয়াড়রা বাদের তালিকায় চলে যান। এই ভাবনাটা অমূলক। মনে রাখতে হবে, দিনের উইকেটের উপরে দল গঠনটা বড় করে দেখা দেয়। সেখানে কে জায়গা পেলেন বা পেলেন না, তা নিয়ে সমালোচনা করে ভারতীয় শিবিরের পরিবেশকে নষ্ট করা উচিত নয়।