গৌতম গম্ভীরকে ‘হায় হায়’ ধ্বনি

ফাইল চিত্র

গুয়াহাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজে হোয়াটওয়াশ হতে হয়েছে বুধবার ভারতকে। স্বাভাবিকভাবেই, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এইভাবে সিরিজ হারের পর সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীরের ওপর। প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে সমর্থকদের একটা অংশ চাইছে এখনই সরে দাঁড়ান কোচের পদ থেকে গৌতম গম্ভীর। এমনকি, এখানে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শেষে মাঠে উপস্থিত সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই গো-ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন গম্ভীরের উদ্দেশ্যে। কোচের প্রতি এই ব্যবহারে দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন ক্রিকেটার মহম্মদ সিরাজ ও ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাক। এমনকি যখন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কোচ ও অন্যান্যরা দাঁড়িয়েছিলেন, তখনই দর্শকরা ‘গম্ভীর হায় হায়’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। সেই সময় মাঠের মধ্যে থেকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে সিরাজ শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কলকাতার ইডেন উদ্যানে হেরে যাওয়ার পরে কোচ গম্ভীরকে এমন অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়নি। পুলিশ দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করতে গেলে ঝামেলা বেধে যায়।

ভারতীয় দলের কোচের পাশে দাঁড়িয়েছেন বোর্ড কর্মকর্তারা। পাশাপাশি, কোচ অজুহাত খুঁজছেন ভারতীয় দলের ত্রুটিটা কোথায় ছিল। তার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ খেলার আগে একদমই প্রস্তুতির সময় পাওয়া যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলে ফেরার চারদিনের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হয়েছে তাদের। যার ফলে খেলোয়াড়রা বেশ ক্লান্ত ছিল বলেই দাবি করেছেন। এজন্য, বোর্ডের কাছে প্রস্তুতির সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের উন্নতির জন্য সবসময় চেষ্টা করে যাবেন। তাঁর মতে, যদি সত্যিই টেস্ট ক্রিকেটের উন্নতি করতে হয়, তাহলে এই ফরম্যাটটাকে আরও প্রাধান্য দিতেই হবে। আর এজন্য শুধু ক্রিকেটার বা সাপোর্ট স্টাফদের দোষ দিলে চলবে না বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কোচ গম্ভীর।

প্রোটিয়াদের কাছে সিরিজে হোয়াটওয়াশ হলেও আপাতত গম্ভীরকে ছাঁটাইয়ের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না বিসিসিআই। আপাতত বোর্ড গম্ভীরকে কিছুটা সময় দিতে চাইছে। তবে গম্ভীরকে কোচ হিসেবে কতদিন দেখতে পাওয়া যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের খেলা শেষ হওয়ার পরেই বোর্ড কর্মকর্তারা বৈঠকে বসবেন কোচের সঙ্গে। হয়তো সেখানে তাঁর কাছে জবাবদিহি চাইতে পারে বোর্ড। তার জবাবে বোর্ড কর্মকর্তারা অসন্তুষ্ট হলে কোচ গম্ভীরকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।


এদিকে, প্রোটিয়াদের কাছে সিরিজ হেরে বোর্ডের নীতিকেই দায়ী করেছেন গম্ভীর। এদিকে, দল হারলেও গম্ভীরের পাশে রয়েছেন ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা। আবার অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার গম্ভীরের পরিকল্পনাকে কিছুতেই সমর্থন করছেন না। তাঁদের অভিমত, যদি ম্যাচে ফিরতেই না পারলাম, তাহলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দলটাকে ডোবানোর কোনও কারণ নেই। এটা মনে রাখতে হবে, বার বার যদি ভারতীয় দল পিছিয়ে পড়ে, তাহলে কামব্যাক করা বেশ কঠিন হয়ে যায়। তারপরেও মনে রাখতে হবে, তরুণ ব্রিগেড যদি মনোবল হারিয়ে ফেলে, সেখানে ভাঙন ধরবেই। তার জন্য প্রয়োজন তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে দলে রেখে তাঁদের অনুপ্রেরণা দেওয়া। ভুল থাকতে পারে, কিন্তু তাই বলে প্রতিটি খেলায় ভুল পদক্ষেপ থাকে, সেখানে কোনও সান্ত্বনা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে না। তার জন্য প্রয়োজন নিবিড় অধ্যবসায় ও প্রত্যয়ী হওয়া।