দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পরপর দু’টি টেস্টে ভারতীয় ক্রিকেট দল যে নাস্তানাবুদ হয়েছে, তা ভাবাই যায়নি। দু’টি টেস্ট ম্যাচেই লজ্জার হারে ভারত মুখ লুকিয়েছে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেইভাবে পাত্তা দিতে না গিয়ে এমন দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়েছে কোচ গৌতম গম্ভীর ব্রিগেডকে। হোয়াইট ওয়াশ হয়েছে ভারত ঘরের মাঠে। খেলার হতাশাজনক ফলাফলে প্রকাশ পেয়েছে ভারতীয় দলের দুর্বলতা। প্রথমে কোচ গৌতম গম্ভীর যেভাবে এই হারের জন্য উইকেটের চরিত্রের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের উপরে দোষ চাপিয়েছেন, তা জানার পরেই বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। কলকাতা টেস্টের পরে গৌতম গম্ভীর সাংবাদিক বৈঠকে যেকথা বলেছেন, তা পুরোপুরি বদল করে দ্বিতীয় টেস্টে হারের ফলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন কিছু অপ্রয়োজনীয় কথা বলেছেন, যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। দল যখন চাপের মধ্যে, তখন কোচের কথায় আরও বিভ্রান্তির জন্ম নিয়েছে। এমনটাই বিসিসিআই কর্মকর্তাদের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট হয়েছে।
গুয়াহাটিতে ভারতীয় দল ৪০৮ রানে লজ্জাজনকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যাওয়ার পরে কোচ গৌতম গম্ভীর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরও বিতর্ক বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই দায় আমার একার নয়। সবাইকেই দায়ী করতে হবে। অন্যদিকে নিজের পিঠ বাঁচাতে গিয়ে নানারকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন গম্ভীর। অতীতে রাহুল দ্রাবিড় কিংবা রবি শাস্ত্রী কোচ থাকাকালীন এই ধরনের কথা শোনা যায়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তাঁর পদ্ধতি, দল বাছাই এবং বিশেষত অলরাউন্ডার নির্ভর টেমপ্লেট নিয়েও। টেস্ট দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ও বোলারদের বাদ দিয়ে বেশি সংখ্যক অলরাউন্ডারদের দলে রাখাটা নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। গৌতম গম্ভীরের এই ভাবনাকে কেউই পছন্দ করেননি। তা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে প্রাক্তন খেলোয়াড়রাও সমালোচনায় ভরিয়ে দিয়েছেন গম্ভীরকে। তাঁরা প্রত্যেকেই অসন্তুষ্ট।
তবে এত কিছু হওয়ার পরেও এখনই কোচ গৌতম গম্ভীরকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় বোর্ড। আসলে টেস্টে ভারতের পরের হোম সিরিজ অনেকটা দূরে। অর্থাৎ আগস্ট মাসে খেলা। তার আগে গৌতম গম্ভীরকে পরীক্ষা দিতেই হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যা ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সাদা বলের ক্রিকেটে সাফল্য এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও এশিয়া কাপ ক্রিকেটে সাফল্যের পরে ভারতীয় বোর্ড কোচ গৌতম গম্ভীরের উপরেই আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু সেই ভরসা এখন ক্রমে নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। যদি দলের অবস্থা না বদলানো যায়, তাহলে তবে দলের প্রতি সমর্থন সরে যাবে। কোচ গৌতম গম্ভীর হয়তো এখন থেকে গেলেন, কিন্তু তাঁর অবস্থা নিরাপদ নয়, তা বলাই বাহুল্য। তাই সামনে যে টুর্নামেন্টগুলি আছে, সেই টুর্নামেন্টের ভিত্তিতেই দেখা হবে কোচ গৌতম গম্ভীরকে রাখা হবে কিনা।