দ্রুত আইএসএল শুরু করার দাবিতে সমবেত আবেদন ফুটবলারদের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

আইএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। লিগ আয়োজনের জন্য গত ১৬ অক্টোবর টেন্ডার ডাকা হলেও এফএসডিএল সহ কোনও সংস্থাই টেন্ডার জমা করেনি। ফলে, আদেও চলতি মরসুমে আইএসএল আয়োজন করা যাবে কি না, সেই নিয়ে চলছে জল্পনা। নিজেদের মধ্যে বৈঠকে ফেডারেশন পুরো বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনুশীলন স্থগিত রেখেছে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট, কেরালা ব্লাস্টার্স ও বেঙ্গালুরু এফসির মতো দল। আইএসএল শুরু হওয়া নিয়ে দীর্ঘ এই টালবাহানায় রীতিমতো বিরক্ত দেশের এক নম্বর লিগে খেলা দেশি-বিদেশি সকল ফুটবলাররাই। আগেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের দুই ফুটবলার সৌভিক চক্রবর্তী ও দেবজিৎ মজুমদার। আর, এবার যত দ্রুত সম্ভব আইএসএল শুরু করার দাবি জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার হলেন ফুটবলাররা। সেই তালিকায় বেঙ্গালুরু এফসির সুনীল ছেত্রী থেকে শুরু করে ইস্টবেঙ্গলের সাউল ক্রেসপো, মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের অধিনায়ক শুভাশিস বোস সকলেই রয়েছেন। তাঁদের একমাত্র দাবি যত দ্রুত সম্ভব দেশের একনম্বর লিগ শুরু করতে হবে।

লিগ নিয়ে চূড়ান্ত এই অনিশ্চয়তার মাঝেই মাঠে নামতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ফুটবলাররা। সরাসরি না বললেও ফুটবলাররা প্রত্যেকেই এজন্য ফেডারেশন কর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে দায়ী করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে তাঁরা দাবি তুলেছেন, এই মুহূর্তে দেশে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল হওয়াটা সবচেয়ে বেশি দরকার। ভারতীয় ফুটবলে দীর্ঘ দিন ধরে যে অনিশ্চয়তা চলছে তাকে অন্ধকার সুড়ঙ্গের সঙ্গে তুলনা করেছেন ফুটবলারার। এরপরেই ফেডারেশনের উদ্দেশ্যে তাঁদের অনুরোধ, যারা দেশের ফুটবল চালাচ্ছে তারা এবার অন্তত লিগ আয়োজন করার একটু সৎ প্রচেষ্টা দেখাক।

এই প্রসঙ্গে বলা যায়, বিষ্ণু, সাহাল, সন্দেশ ঝিঙ্গান’রা আইএসএল শুরু করার জন্য যতই দাবি জানান না কেন, পরিস্থিতি মোটেও এতটা সহজ নয়। গত ১৬ অক্টোবর আইএসএলের সম্প্রচারস্বত্ব, স্পনসরশিপ-সহ বাণিজ্যিক কাজকর্ম সামলানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। সেইসময়, আগ্রহী সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে ফেডরেশনের কাছে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল। যা ফেডারেশন কর্তারা দিয়েও ছিলেন। যদিও, তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। একের পর এক আলোচনা, পর্যবেক্ষণ এবং সময়সীমা বাড়ানোর পরেও আইএসএলের কোনও আয়োজক খুঁজে পাওয়া যায়নি। একটা সময় মনে করা হয়েছিল, এফএসডিএল হয়তো দরপত্র জমা দেবে। কিন্তু, শেষপর্যন্ত তারাও আগ্রহ দেখায়নি। এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল. নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে ফের একবার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিল ফেডারেশন। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এই ঘটনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টে নাগেশ্বর রাও, তাঁর প্রতিবেদন জমা দেবেন। ফলে, আপাতত দেশের একনম্বর লিগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কি সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেশের ফুটবল মহল।


কারণ, বর্তমানে আদালতের সিদ্ধান্তের ওপরে অনেকটাই নির্ভর করছে দেশের একনম্বর লিগের ভাগ্য। তবে, এই পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের এই প্রতিবাদী চিঠি কিন্তু নিঃসন্দেহে ফেডারেশনের ওপর চাপ অনেকটাই বাড়াবে।