দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের কাছে ৩৩৬ রানে হেরে যাওয়াটা ইংল্যন্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তিনি উইকেটকেই দায়ী করেছেন এই হারের জন্য। এমনকি অধিনায়ক বেন স্টোকস টসে জিতে কেন ফিল্ডিং নিলেন, তাও বুঝে উঠতে পারলেন না কোচ। এটা মনে রাখতে হবে, ঘরের মাঠে উইকেট যদি তাঁদের সহযোগিতা করে, তাহলে প্রথমে ব্যাট নিয়ে খেলা উচিত ছিল। যার ফলে প্রতিপক্ষ দল সুবিধা আদায় করে নিতে পেরেছে এবং জয় তুলে নিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে এনেছে। সামনে রয়েছে লর্ডসে তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। সেই কারণে উইকেটের চরিত্র সম্পর্কে তিনি পিচ কিউরেটরকে কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। আসলে এজবাস্টনে ২২ গজের উইকেটে যে খেলা হয়েছে, তার চরিত্র ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের মতো। ম্যাকালাম বলেছেন, আমরা সবসময় উইকেটে আরও গতি চাই। চাই বাউন্স। বল আরেকটু বেশি সুইং করলেই সমস্যা থাকে না। আশা করব, তৃতীয় টেস্টে এই সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে। কোচের কথা অনুযায়ী প্রাণবন্ত উইকেটে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ড দলের বাড়তি একটা সুবিধা পাওয়া যাবে। সেই কারণেই উইকেট নিয়ে একটা বিশেষ নির্দেশ পাঠিয়েছেন কিউরেটরকে।
দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা উইকেটের চরিত্র সেইভাবে বুঝে উঠতে পারেননি। সেই কারণেই প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। যার ফলে খেলা যত এগিয়েছে, ততই উইকেটের চরিত্র ভারতের পক্ষেই গেছে। নিঃসন্দেহে ভারত ভালো খেলেছে। ব্যাটিংও ভালো করেছে। আবার বোলাররাও বাড়তি সুবিধা নিয়ে বল করেছেন। কোচ ম্যাকালাম বলেছেন, ভারতীয় বোলাররা দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন। বিশেষ করে আকাশদীপকে প্রশংসা করেন। এই ধরনের পিচে বল করে বড় হওয়ার স্বপ্নকে তুলে ধরতে হয়। এবারে একটু ঘুরে গিয়ে কোচ ম্যালকাম বলেন, আমাদের বোলাররা খুব সাধারণ বোল করেছেন। যার ফলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগটা পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন এবং বড় অঙ্কের রান স্কোরবোর্ডে পৌঁছে দিয়েছেন। আবারও বলছি, প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়াটা আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল। সেই কারণেই ২০০ রানের মধ্যে যখন পাঁচটা উইেকেট পড়ে যায়, তখন ইংল্যান্ডের বোলাররা কোনও সুবিধা আদায় করে নিতে পারেননি। সেই সুযোগে ভারতীয় দল ৫৮০ রান প্রথম ইনিংসে করে ফেলে। তবে শোনা যাচ্ছে, লর্ডসের মাঠে আবার ভারতীয় দলের হয়ে বল করতে নামবেন যশপ্রীত বুমরা। সঙ্গে রয়েছেন আকাশদীপ। তাই ইংল্যান্ড দলকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। আশা করা যেতে পারে, লর্ডসের মাঠে আলাদা লড়াই হবে।
তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে জফ্রা আর্চার খেলতে পারেন। তাই বোলিং সাইডটা কিছুটা তাঁদের শক্তিশালী হবে। আর্চার নিজেও প্রস্তুত রয়েছেন খেলার জন্য। অনুশীলনে তাঁকে বেশ চনমনে লাগল।যদি আর্চার খেলেন, সেক্ষেত্রে ভারতীয় দল একটু চাপে থাকবেন, তা নতুন করে বলার নেই। অন্যদিকে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা বেশ আত্মবিশ্বাসী। শোনা যাচ্ছে অধিনায়ক শুভমন গিলের জায়গা বদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তৃতীয় নম্বরে ব্যাট করতে আসেন সাই সুদর্শন, তাহলে করুণ নায়ারকে বাদের তালিকায় চলে যেতে হবে। কারণ এই দুই ব্যাটসম্যান তিন নম্বরে সাধারণত খেলে থাকেন। করুণ নায়ারের ব্যাট থেকে এখনও পর্যন্ত সেই অর্থে কোনও রান পাওয়া যায়নি। তবে শ্রেয়স আইয়ার মনে করছেন, যদি অধিনায়ক শুভমন গিল তিন নম্বরে খেলতে আসেন, তাহলে ভারতের স্কোরবোর্ড আরও উজ্জ্বল হবে। কারণ শুভমন যে স্টাইলে খেলছেন, তা প্রতিপক্ষ দলকে ভাবিয়ে তুলছে। সাধারণত, শ্রেয়স আইয়ারকে অল রাউন্ডার হিসেবেই সবসময় দেখা হয়ে থাকে। তাঁর ঝুলিতে এখনও পর্যন্ত ৬৩৬৩ রান রয়েছে। তিনি কেন জায়গা পেলেন না, সেই প্রশ্নটাও উঠেছে।