ইডেনের পিচ এখন প্রশ্নের মুখে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ফের চর্চায় ইডেন উদ্যানের পিচ। প্রথমদিন দক্ষিণ আফ্রিকার পর ম্যাচের দ্বিতীয়দিন অর্থাৎ শনিবার ইডেনের বাইশ গজ কার্যত ‘জুজু’ দেখালো ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। প্রোটিয়াদের ১৫৯ রানের জবাবে ১৮৯ রানে শেষ ভারতের প্রথম ইনিংস। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আরও করুন অবস্থা টেম্বা বাভুমার দলের। শনিবার খেলা শেষে ৯৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কার্যত ধুঁকছে তারা। লিড মাত্র ৬৩ রানের। ফলে, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে বিশাল কোনও অঘটন না ঘটলে রবিবারই হয়তো শেষ হয়ে যাবে প্রথম টেস্ট ম্যাচ। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে। ম্যাচ শুরুর আগে পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ইডেনের পিচে বল মারাত্মক ঘুরবে না। ব্যাটসম্যান এবং বোলার উভয়ই কিছু না কিছু সাহায্য পাবে।

যদিও, তাঁর দাবি যে শুধুই কথার কথা ছিল তা দ্বিতীয় দিনের শেষে অনেকটাই স্পষ্ট। খেলার প্রথমদিন থেকেই পিচে অসমান বাউন্স রয়েছে। যার ফলে, প্রথম দু’দিনে রীতিমতো অসহায়ভাবে আউট হয়েছেন ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা, উভয় দলের একাধিক ব্যাটসম্যান। প্রথম দিনের শেষেই পিচ নিয়ে নিজেদের ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স। শনিবার চা-বিরতিতে প্রায় একই কথা শোনা গেল প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারার মুখেও। ইডেনের পিচকে বিপজ্জনক বলে দাবি করে পূজারা বলেন, এই পিচ ব্যাটসম্যানদের কোনোভাবেই সাহায্য করছে না। ফলে, তাদের বিশেষ কিছু করারও থাকছে না। পুজারার মতে, বল কখন কোন উচ্চতায় আসছে, তা ব্যাটসম্যানরা একেবারেই বুঝতে পারছেন না। পিচে দ্বিতীয়দিন থেকেই বেশ কিছু ছোট ছোট ফাটল তৈরি হয়েছে। যারজন্যে, বল পড়ে প্রত্যাশার থেকে বেশি ঘুরছে।

এই প্রসঙ্গে বলা যায়, শনিবার দ্বিতীয় দিনের চা বিরতির আগেই ২০ উইকেট পড়ে গিয়েছে। এইরকম পিচ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিরক্ত দু’শিবির। প্রথম দিন চা বিরতির পর থেকেই ধুলো উড়তে শুরু করেছিল ইডেনের পিচে। সেইসময়েই আশঙ্কা করা হয়েছিল, ইডেনের পিচ হয়তো ফের একবার বোলারদের স্বর্গরাজ্য হতে চলেছে। দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে সে ছবিই বারবার ধরা পড়ল। অসমান বাউন্সের সমস্যা তো ছিলই। সেইসঙ্গে, দ্বিতীয়দিনের শুরু থেকে বল পড়ে লাট্টুর মতো পাক খেল। পিচ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল শুত্রুবার ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই। সেদিন সকালে যশপ্রীত বুমরা’র ১৪০ কিলোমিটার গতির বল তিন বার মাটি ছুঁয়ে ঋষভ পন্থের হাতে পৌঁছায়। ইডেনের পিচ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ভারতের আর এক প্রাক্তন তারকা অনিল কুম্বলেও। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, টেস্ট ক্রিকেটের মতো ম্যাচে এমন পিচ কোনওভাবেই প্রত্যাশিত নয়। বিশেষত ভারতকে যেখানে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে।


এদিকে, ঘরের মাঠে খেলা হলেও পিচ থেকে কোনও সুবিধা পাচ্ছে না ভারতীয় দল। যারফলে, স্বাভাবিকভাবেই পিচের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টির ওপর নজর রাখছে আইসিসিও। তাই বলাই যায়, সিএবি-র সভাপতি হিসাবে এর দায় কিন্তু কোনওভাবেই এড়াতে পারেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।