অলিভিয়া সরকার
তিন বছর বন্ধ থাকার পর কল্যাণী স্টেডিয়ামে বুধবার শুরু হল ১২৫ তম আইএফএ শিল্ড। আর, শিল্ডের প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে নিজেদের অভিযান শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। বুধবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে শ্রীনিধি ডেকান এফসিকে ৪-০ গোলে সহজেই হারাল তারা। খেলার শুরু থেকেই যথেষ্ট আধিপত্য ছিল অস্কার ব্রুজোর দলের। তাঁদের পরপর আক্রমণে রীতিমতো দিশেহারা দেখাচ্ছিল শ্রীনিধির তরুণ ফুটবলারদের। তবে, জুনিয়র দল হোক বা সিনিয়র দল গোল মিসের চেনা রোগ এই ম্যাচেও পিছু ছাড়ল না ইস্টবেঙ্গলের। খেলার শুরু থেকেই একের পর এক সহজ সুযোগ নষ্ট করতে থাকে লাল হলুদ ব্রিগেড।
একইসঙ্গে বিশেষ প্রশংসা করতে হয় শ্রীনিধির গোলরক্ষক আদিল ফয়জলের। ম্যাচে দলের হয়ে বেশকিছু নিশ্চিন্ত পতন রোধ করেন তিনি। কিন্তু, তার যাবতীয় প্রতিরোধ ব্যর্থ হয় ম্যাচের ২২ মিনিটে। এইসময়, বক্সের বাইরে ইস্টবেঙ্গলকে ফাউল করলে ফ্রিকিক পায় তারা। সেই ফ্রিকিক থেকে মিগুয়েলের দুরন্ত শট গোলরক্ষক আদিল প্রথম প্রচেষ্টায় প্রতিহত করলেও ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন জয় গুপ্তা। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, এদিনই প্রথম ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন জয়। আর প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে দুরন্ত গোল করে নিজের অভিষেকটা বেশ স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি । ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও নিজেদের আক্রমণের চাপ বজায় রেখেছিল অস্কার ব্রুজোর দল। সেই আক্রমণ থেকে ম্যাচের ৩৮ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান ২-০ গোলে যান সাউল ক্রেসপো। বিপিনের মাপা ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করে যান তিনি। এরপর বেশকিছু আক্রমণ গড়ে তুললেও প্রথমার্ধে খেলার ফলাফলে আর কোনও পরিবর্তন হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লালচুংনুঙ্গাকে তুলে জিকসন সিংকে মাঠে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজো। এরপর ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন মরোক্কান স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদ। ডুরান্ডের ডার্বিতে চোট পাওয়ায় পর এদিনই প্রথম মাঠে নামলেন তিনি। আর নেমেই যেভাবে গোল করলেন তিনি তা যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। এর দু’মিনিটের মধ্যে লাল হলুদের হয়ে ব্যবধান ৪-০ করে যান জিকসন সিং। এরপর বেশকিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোল ব্যবধান আর বাড়েনি। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে এই ম্যাচে একদমই কোনও পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি শ্রীনিধির আক্রমণভাগের ফুটবলাররা। শেষপর্যন্ত, ওই ৪-০ ব্যবধানে জিতেই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচ শেষে লাল হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজো জানান, দলের খেলায় বেশ খুশি তিনি। তবে, এখনই ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে ভাবতে চান না অস্কার। আপাতত তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য নামধারী ম্যাচ। এদিকে, বুধবারই ইস্টবেঙ্গল কোচ হিসেবে একবছর পূর্ণ হল অস্কারের। ফলে, এদিন ম্যাচ জিতে স্বাভাবিকভাবেই দারুন খুশি তিনি। একইসঙ্গে জানালেন, যদি ফাইনালে ডার্বি ম্যাচ হয় তাহলে তাঁর দল অবশ্যই জেতার লক্ষ্যে মাঠে নামবে।
এদিন ম্যাচ শুরুর আগে আইএফএ’র পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। মূলত, দুর্গাপুজোর কথা মাথায় রেখেই এই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল। মাঠে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অগ্নিনির্বাপক ও জরুরী পরিষেবা মন্ত্রী সুজিত বসু, সাংসদ পার্থ ভৌমিক।