জিয়াংদা-র বিরুদ্ধে লড়াই করেও হার ইস্টবেঙ্গল মহিলা দলের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে চিনের দল উহান জিয়াংদা ডব্লিউএফসি’র বিরুদ্ধে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল। বৃহস্পতিবার চিনের হানকু কালচারাল স্পোর্টস সেন্টারে স্থানীয় দল জিয়াংদা’র বিরুদ্ধে লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত ০-২ গোলে হার স্বীকার করল তারা। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের দল পিএফসি নাসাফের বিরুদ্ধে ড্র করেছিল। ফলে, কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে এই ম্যাচে জয় ছাড়া কোনও উপায় ছিল না জিয়াংদা’র কাছে। তার ওপর এই ম্যাচে তাদের দলে ফিরেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ তিন ফুটবলার ইয়াও ইয়েউ, উই হাইয়ান ও ওয়াং শুয়াং। ফলে, কিছুটা হলেও শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছিল তাদের। পাশাপাশি, ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় স্থানীয় সমর্থন তো ছিলই। সবমিলিয়ে এদিন খেলার শুরু থেকেই নিজেদের দাপট দেখাতে চীনের দলটি।

তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে চাপে পড়ে যায় অ্যান্থনি অ্যান্ড্রুজের দল। খেলার আট মিনিটের মাথায় গোল করে জিয়াংদাকে এগিয়ে দেন ওয়াং শুয়াং। তখন কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করলেন লাল-হলুদ রক্ষণভাগের ফুটবলাররা। ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরেও নিজেদের আক্রমণের চাপ বজায় রেখেছিল জিয়াংদা। এইসময় যেন কোনওরকম প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারছিল না ইস্টবেঙ্গল। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ছিল চিনের দলটির কাছে। এরপর, ম্যাচের খেলার ১৭ মিনিট নাগাদ পেনাল্টি পায় তারা। গোলরক্ষক পান্থই চানু বক্সের মধ্যে ওয়াং শুয়াংকে টেনে ফেলে দিলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। যা থেকে ব্যবধান ২-০ করতে ভোলেননি সেই শুয়াং। ম্যাচের এইসময় জিয়াংদা’র খেলোয়াড়দের ক্রমাগত আক্রমণের সামনে রীতিমতো অসহায় দেখালো লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। তবে, ভাগ্য সহায় থাকায় গোল ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। উল্টোদিকে, ইস্টবেঙ্গল প্রথম আক্রমণে ওঠে ৩০ মিনিটের পর। ৩৩ মিনিট নাগাদ প্রথম কর্নার পান জ্যোতি চৌহান’রা। যদিও, তা থেকে প্রয়োজনীয় গোল আসেনি। ওই ০-২ গোলে পিছিয়ে থেকেই সাজঘরে ফেরেন অ্যান্থনি অ্যান্ড্রুজের দল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ফের দাপট দেখতে থাকে জিয়াংদা ডব্লিউএফসি। খেলার এই অর্ধে দলের হয়ে কার্যত অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন লাল-হলুদ গোলরক্ষক পান্থই চানু। বেশকিছু নিশ্চিন্ত পতন রোধ করেন তিনি। নাহলে, চিনের দলটির পক্ষে ব্যবধান আরও বাড়তেই পারতো। ৬৬ মিনিট নাগাদ জিয়াংদা’র খেলোয়াড়ের বাড়ানো বল গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন লাল-হলুদ রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। এরপর দুই দলই কিছু আক্রমণ গড়ে তুললেও, তা থেকে আর কোনও গোল আসেনি। শেষপর্যন্ত ওই ০-২ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল। খেলার ৭৭ মিনিটে সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন সুস্মিতা লেপচা। সৌম্যা গুগুলোথের বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়েও বাইরে মারেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, এদিন ম্যাচ হারলেও এখনও কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা খোলা রয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেডের জন্য। সেজন্য, গ্রুপের শেষ ম্যাচে আগামী রবিবার পিএফসি নাসাফের বিরুদ্ধে ২ গোলের কম ব্যবধানে হারলেও কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাবে তারা। কিন্তু, বেশি ব্যবধানে হারলেও শেষ আটের ছাড়পত্র পেতে সিল্কি দেবী’রা। সেজন্য অবশ্য বাকি দলগুলির ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে। কারণ, এএফসি’র নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুটি দলের পাশাপাশি সেরা দুটি তৃতীয় স্থানাধিকারী দলও শেষ আটের ছাড়পত্র পাবে।