খেলোয়াড়দের ধকল কমাতে নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা চাই: জোকোভিচ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

হঠাৎই পেশাদার টেনিসে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে খেলোয়াড়দের বেশ চাপে পড়ে যেতে হচ্ছে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ কিছু খেলাতে তাঁদের অংশ নেওয়ার ফলে শারীরিক ধকল বেড়ে গিয়েছে। পেশাদার টেনিসের সূচি অনুযায়ী, বছরে প্রায় ছ’মাস বড় প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে প্রথম সারির খেলোয়াড়দের। নতুন এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিশ্বের তারকা টেনিস খেলোয়াড় নোভাক জোকোভিচ।

দু’সপ্তাহের মাস্টার্স প্রতিযোগিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন নোভাক জোকোভিচ। ইউএস ওপেনের আগে অন্য টেনিস খেলোয়াড়দের ভূমিকা নিয়েও সরব তিনি। জোকারের প্রশ্ন, বিশ্বের প্রথম সারির খেলোয়াড়েরা কেন বছরের এতগুলো বড় প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে সরব হবে না।

চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের পাশাপাশি বছরে আটটা মাস্টার্স প্রতিযোগিতা হয়। নতুন সূচি অনুযায়ী এই প্রতিযোগিতাগুলো হচ্ছে দু’সপ্তাহ ধরে। অর্থাৎ এক জন পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়কে বছরে ১২টা বড় প্রতিযোগিতা খেলতে হচ্ছে। গ্র্যান্ড স্ল্যামের পর সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়া যায় মাস্টার্স খেললে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রতিযোগিতাগুলো এড়িয়ে যেতে পারেন না বিশ্বের প্রথম সারির টেনিস খেলোয়াড়রা। অথচ এতগুলো বড় প্রতিযোগিতা খেলার ধকল কম নয়। তা নিয়েই সরব হয়েছেন জোকোভিচ। তিনি মনে করেন একা প্রতিবাদ করে কোনও লাভ হবে না। জোট বদ্ধভাবে টেনিস খেলোয়াড়দের প্রতিবাদে সামিল হতে হবে। তাহলেই আয়োজকদের টনক নড়বে।


বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামের আগে জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘সত্যি বলতে দু’সপ্তাহের মাস্টার্স প্রতিযোগিতাগুলো খেলতে আমার ভাল লাগে না। একদম উপভোগ করি না। আমি বরং অন্য প্রতিযোগিতায় খেলতে চাই। আমাদের আসলে বছরে ১২টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে হয়। গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলো দু’সপ্তাহ ধরে চলে। আবার মাস্টার্সগুলোও দু’সপ্তাহ ধরে চলে।’’

হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের প্রথম সারির টেনিস খেলোয়াড়দের প্রায় ছ’মাস বড় প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকতে হয়।
২৪টা গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক আরও বলেছেন, ‘‘প্রথম সারির অনেক খেলোয়াড়ই দু’সপ্তাহের মাস্টার্স প্রতিযোগিতা পছন্দ করে না। এখন যে ভাবে প্রতিযোগিতাগুলো হচ্ছে, সেটা অনেকেরই পছন্দ নয়। ওদের বক্তব্য সমর্থন করি। কিন্তু যখন প্রয়োজন ছিল অর্থাৎ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় অনেক খেলোয়াড়ই যথেষ্ট সক্রিয় ছিল না। ঠিক ভাবে মতামত জানায়নি।’’ বিরক্তি নিয়ে জোকোভিচ বলেছেন, ‘বিশ্বের প্রথম সারির খেলোয়াড়দের এই সমস্যা নিয়ে চলতে হচ্ছে। সকলেই নিজের অনুভূতির কথা বলে। কিন্তু বৈঠকগুলোয় যখন সরব হওয়ার দরকার, সক্রিয় থাকার দরকার, তখন আর সেটা করা হয়ে ওঠে না। আসলে বিষয়টা কঠিন। আমি নিজেও অনেকগুলো বৈঠকে গিয়েছি।

তবে এটা করা দরকার। মনে রাখা উচিত, কথাগুলো শুধু নিজের জন্য নয় আগামী প্রজন্মের স্বার্থেও বলতে হবে। পরের প্রজন্মের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে। সঠিক পদক্ষেপ আমাদের করতে হবে।’
ইউএস ওপেনের আগে কোনও প্রতিযোগিতায় খেলেননি জোকোভিচ। খেলেননি সিনসিনাটি মাস্টার্সেও। ম্যাচ অনুশীলন ছাড়াই খেলবেন বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম। এ নিয়ে জোকোভিচের অভিমত, ‘ইচ্ছা করেই কোথাও খেলিনি। গত তিন-চার সপ্তাহ কঠোর অনুশীলন করেছি। আর পরিবারকে যতটা সম্ভব বেশি সময় দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি এখন আর র্যা ঙ্কিং নিয়ে ভাবি না। পয়েন্ট পাওয়ার আগ্রহও নেই। কোনও কিছু ধরে রাখতে চাই না। এ সব নিয়ে আর ভাবতেও চাই না। মনের আনন্দে টেনিস খেলাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

রবিবার উইএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলবেন জোকোভিচ। ২০২৩ সালে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আর কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়। সেই কারণেই টেনিস প্রেমীদের কাছে জোকোভিচের খেলা আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।