ডেম্পোর লড়াইয়ে ডার্বি ম্যাচ জমে উঠল

প্রতীকী চিত্র

ভাবতে অবাক লাগে, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস দল গঠন করেছে। সেই জায়গায় অনেক কম অঙ্কের অর্থে তৈরি করা ডেম্পো স্পোর্টসের তরুণ ফুটবলাররা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে দুই প্রধানকে ধাক্কা দিয়েছে। মঙ্গলবার মোহনবাগানের সঙ্গে জবরদস্ত লড়াই করে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়ার পরেই আগামী ডার্বি ম্যাচের রং একেবারে বদলে গিয়েছে। অর্থাৎ দুই প্রধানের লড়াইটা জমে গেল।

বিদেশিহীন একটা দল। মূলত, তরুণ, প্রতিভাবান ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়েছেন ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের কোচ সমীর নায়েক। তবে সঠিক পরিকল্পনা আর অধ্যবসায় থাকলে সবকিছু করা সম্ভব। এবারের সুপার কাপ ফুটবলে তা প্রমাণ করে দিয়েছে ডেম্পো। বলতে অসুবিধে নেই, দলের তরুণ ব্রিগেড যেভাবে বাংলার দুই প্রধানের সঙ্গে লড়াই করে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে, তার জন্য প্রশংসা তোলা থাকবেই। প্রায় এক দশক পর প্রথম সারির ভারতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলতে নেমেছে তারা। এমনকি এই দলের খেলার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। শেষ মুহূর্তে রিয়াল কাশ্মীর খেলতে পারবে না বলে ডেম্পোকে ডাকা হয়।

অথচ, খেলোয়াড়দের শরীরীভাষায় এতটুকু ভয় নেই। প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ইস্টবেঙ্গলকে আটকে দেওয়ার পর মঙ্গলবার গত আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগানকেও রুখে দিল তারা। তবে, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এই দলকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাননি বিশেষজ্ঞরা। হয়তো, গুরুত্ব দেননি দুই দলের দুই স্প্যানিশ কোচও। এমনকি, লাল-হলুদ ব্রিগেডকে আটকে দেওয়ার পরেও বিষয়টাকে হয়তো নিছকই অঘটন বলে ভেবেছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ হোসে মোলিনা। এদিন তারই মাশুল গুনতে হল মোহনবাগানকে। ম্যাকলারেন, দিমিত্রি, কামিংস সমৃদ্ধ সবুজ-মেরুনের আক্রমণভাগ পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও ডেম্পোর গোলমুখ খুলতে পারল না। বরং বলা ভালো, দিমিত্রি, ম্যাকলারেনদের গোল করতেই দিলেন না সাইয়েশ বাগর, ড্যানিয়েলরা।


আর, এরফলেই জমে গেল ডার্বির লড়াই। বর্তমানে গ্রুপ-এ’র যা পরিস্থিতি তাতে সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেতে গেলে কার্যত জয় ছাড়া কোনও উপায় নেই ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের কাছে। কারণ, মঙ্গলবার সবুজ-মেরুনের বিরুদ্ধে ড্র করার পরে প্রবলভাবে সেমিফাইনালের দৌড়ে ঢুকে পড়েছে ডেম্পো এসসিও। গ্রুপের শেষ ম্যাচে আগামী শুত্রুবার যদি তারা চেন্নাইয়ান এফসি’কে তিন গোলের বেশি ব্যবধানে হারিয়ে দেয় আর ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ড্র হয় তাহলে কিন্তু গ্রুপ শীর্ষে থেকে তারাই পরবর্তী রাউন্ডের ছাড়পত্র পেয়ে যাবে। অবশ্য ডার্বি ম্যাচ ড্র হলেও সেমিফাইনালে পৌঁছাতে পারে ইস্টবেঙ্গল।

তবে, সেক্ষেত্রে ডেম্পোকে তিন গোলের কম ব্যবধানে জিততে হবে। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, এইধরণের ম্যাচ সবসময় একই সময়ে হওয়া উচিৎ। যাতে, কোনও দল বাড়তি সুবিধা না পায়। তবে, নিজেদের হার না মানা পারফরম্যান্সের ফলে নিষ্প্রাণ সুপার কাপের উত্তেজনা হঠাৎই কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল দীর্ঘ দশ বছর পর ভারতীয় ফুটবলের মূলস্রোতে ফেরা ডেম্পো এসসি।