এশিয়া কাপ ক্রিকেটে অংশ নেবার জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের ১৫ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে বিসিসিআই। এই দলকে নেতৃত্ব দেবেন সূর্য কুমার যাদব। সূর্য কুমার যাদব ব্রিগেডে যাঁরা জায়গা পেয়েছেন তাঁদের থেকেও বেশি আলোচনা হচ্ছে বাদের তালিকায় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের নিয়ে। কেন তাঁরা বাদ গেলেন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন প্রত্যেকেই। কিন্তু নির্বাচকদের সিদ্ধান্তে কোন কোন কারণগুলি উঁকি দিয়েছিল তা জানতে নানা রকম অঙ্ক কষা হচ্ছে। প্রত্যেকেই বলছেন যাঁরা বাদ গেছেন এমন কিছু অভিজ্ঞ ও তারকা ক্রিকেটার রয়েছেন তা ভাবা যায় না। নির্বাচকরা কি ব্যাখ্যা দেবেন তাও স্পষ্ট নয়। এমনকি কোচ গৌতম গম্ভীরও বলতে পারছেন না এঁরা কেন দলে অন্তর্ভুক্ত হলেন না? উপেক্ষিত তালিকা বেশ দীর্ঘ। যাঁরা জায়গা পেয়েছেন তাঁদের থেকে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন দৌড়ে। এটা অনেকটা হল শেষ সীমানায় পৌঁছে গিয়েও ছিটকে গেলেন।
প্রথমেই যে তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি মুখর ক্রিকেট মহল তিনি হলেন শ্রেয়স আইয়ার। শ্রেয়সকে কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল তিনি এমন একজন ক্রিকেটার, তিনি যে কোনও ফর্মাটে খেলার সাহস রাখেন। ওপেনার হিসেবে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। প্রয়োজনে তিনি মিডল অর্ডারে খেলতে নেমে ম্যাচের চরিত্র বদলে দিতে জানেন। তাঁর ব্যাট যেকোনও সময় ঝলসে উঠতে পারে। আইপিএল ক্রিকেটে তাঁর ব্যাট থেকে ১৭ ম্যাচে ৬০৪ রান এসেছে।পঞ্জাব কিংস দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালেও তুলেছিলেন। তার আগের বছর কলকাতা দলকে ট্রফি এনে দিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। এমনকি দিল্লি দলকে নেতৃত্ব দিয়েও ফাইনালে খেলবার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন। সেই কারণেই তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতেই পারে না।
ইংল্যাল্ড সফরে কে এল রাহুল ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছেন। কিন্তু কোনও যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি কেনো তিনি বাদের তালিকায় চলে গিয়েছেন। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটেও রাহুলের ব্যাট ঝলসে ওঠে। তবুও তিনি ব্রাত্য। সাহি সুদর্শন জায়গা পাননি ভারতীয় দলে। গত আইপিএলে বেশ দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। এখানেও সমস্যা তিনি ওপেনার। অবশ্য প্রয়োজনে নিচের দিকেও খেলতে তাঁর কোনও অসুবিধা হয় না। ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছে। তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই ওঠে না। উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল ও ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। নির্বাচকরা বুক বাজিয়ে বলতে পারেন এই দুই ক্রিকেটারকে স্ট্যান্ডবাই রাখার কি যুক্তি আছে। নির্বাচকরা অবশ্যই নিরাবতা পালন করবেন এ ব্যাপারে। এরপরেই যে নামটা নিয়ে চর্চা হবে তিনি হলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তামিলনাড়ুর এই ক্রিকেটার ইংল্যান্ড সফরে সবাইকে চমক দিয়ে স্বচ্ছন্দে খেলেছেন। তাঁর ব্যাট থেকে একটা শতরানও এসেছে। বোলার হিসেবেও প্রতিপক্ষ শিবিরে দারুন আঘাত হেনেছেন। তবুও জায়গা হয়নি ওয়াশিংটন সুন্দরের। রিয়ান পরাগ পরপর দুটি মরশুমে আইপিএল ক্রিকেট রাজস্থানের হয়ে বেশ ভালো খেলেছেন। অনেকেই আশা করেছেন এশিয়া কাপ মূল দলে তাঁর জায়গা হবে। এই আশা সার্থক হয়নি। নীতীশ রেড্ডির চোট রয়েছে। হয়তো সেই কারণেই ভারতীয় দলে তাঁকে রাখা সম্ভব হয়নি।
দল ঘোষণার আগে বাংলার মহম্মদ শামিকে নিয়ে বেশ আলোচনা চলছিল। ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলে ছিলেন না। কিন্তু একদিনের বা টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে শামি ভেলকি দিতে পারতেন তা নতুন করে বলবার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু গত বছরে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে দুরন্ত বল করলেও পায়ে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোট হয়তো পুরোপুরি শামিকে ফিট সার্টিফিকেট দিতে পারেনি। তাই তার জায়গা হয়নি ভারতীয় দলে। মহম্মদ সিরাজ ইংল্যান্ড সফরে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচই খেলেছেন। তিনি যেমন সবচেয়ে বেশি বল করেছেন, তেমনি আবার সবচেয়ে বেশি উইকেটও তাঁর ঝুলিতে এসেছে। তাহলে কী বিশ্রাম দেওয়ার জন্যই সিরাজকে বাদের তালিকায় রাখা হয়েছে। ঋষভ পন্থ ও চোটের কারণে বাদ যেতেই পারেন। একটা সময় ভারতীয় টি টোয়েন্টি দলে নিয়মিত ছিলেন রবি বিষ্ণোই। হঠাৎই তিনি মূল স্রোত থেকে ছিটকে গেছেন। সেই ফর্মে না থাকার কারণে তাঁর নাম নিয়ে ভাবেননি নির্বাচকরা।