লন্ডনে ফিটনেস পরীক্ষা দেওয়ায় কোহলিকে নিয়ে বিতর্ক

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারতীয় ক্রিকেটে ফিটনেস এখন সব খেলোয়াড়দের জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে। তার প্রধান কারণ হল শারীরিক দিক দিয়ে পুরোপুরি সুস্থ না থাকলে কোনও ক্রিকেটার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না। হয়তো সেই কারণেই ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড সমস্ত ক্রিকেটারদের বলেছে, সবাইকে ফিটনেস টেস্ট দিতে হবে বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে হাজির হয়ে। প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে বর্তমান অধিনায়ক শুভমন গিল, দ্রুতগামী বোলার যশপ্রীত বুমরা সহ মহম্মদ সিরাজরা বেঙ্গালুরুতে ফিটনেস পরীক্ষায় হাজির হয়েছিলেন। আনা হয়েছে কঠিনতর ‘ব্রঙ্কো টেস্ট’।

কিন্তু ব্যতিক্রম বলতে ভারতের আরেক প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এই ফিটনেস পরীক্ষা নিয়ে বিরাট কোহলিকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি সপরিবারে লন্ডনে রয়েছেন। আর সেখানে থেকেই বিরাট কোহলি ফিটনেস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার বিদেশের মাটিতে এই পরীক্ষা দিয়েছেন। সবার কাছে ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কোহলি বলেছেন, বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ফিটনেস পরীক্ষায় মুখোমুখি হই। আইন অনুসারে নির্দিষ্ট কোনও খেলোয়াড়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। নাকি সিনিয়রদের জন্য একরকম আর জুনিয়রদের জন্য অন্য ভাবনা। এটা কি মেনে নেওয়া যায়?

বিরাট কোহলি অনুমতি নিলেও সেটা কি তাঁর জন্যই প্রযোজ্য হল? তাহলে অন্য ক্রিকেটাররা ভবিষ্যতে এই দাবি তুলতে পারেন। ২৯ আগস্ট বেঙ্গালুরুর মাঠে হাজির ছিলেন রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরা, শুভমন গিল, মহম্মদ সিরাজ, হার্দিক পাণ্ডিয়া, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ শামি, সঞ্জু স্যামসন, ঋতুরাজ গায়কোয়াড় এবং অভিষেক শর্মারা। বেশির ভাগই ন্যূনতম মানদণ্ড ছুঁয়েছেন। কেউ কেউ চোট বা ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে আংশিক পরীক্ষা দিয়েছেন। সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে বসবেন কেএল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋষভ পন্থ, নীতিশ রেড্ডির মতো ক্রিকেটাররা।


টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানানোর পর বিরাট কোহলি এই মুহূর্তে ওয়ান ডে খেলছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসন্ন সিরিজে তাঁর নাম পাকা। কিন্তু ফিটনেস টেস্ট বিদেশে দেওয়ার অনুমতি আদৌ নিয়মসঙ্গত কি না, সেই নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। বোর্ড বলছে—এটা নিছকই ব্যতিক্রম। কিন্তু সমালোচকরা মনে করছেন, এর মধ্যেই বিসিসিআইয়ের নিয়ন্ত্রণগত ফাঁক স্পষ্ট।

ক্রিকেটের বাইরে অন্য খেলাতেও ফিটনেস টেস্ট সাধারণত নির্দিষ্ট কেন্দ্রেই অনুষ্ঠিত হয়। ফুটবল, রাগবি বা হকি—যেখানে নিয়ম এক, সেখানে ভারতীয় ক্রিকেটে ভৌগোলিক নমনীয়তা কতটা গ্রহণযোগ্য? বোর্ড এতদিন জোর দিয়ে আসছিল, ফিটনেস টেস্ট বাধ্যতামূলক ও অভিন্ন। এখন হঠাৎ ব্যতিক্রম নজির তৈরি করলে ভবিষ্যতে নীতি প্রণয়ন কি আদৌ কঠোর থাকবে? এই প্রশ্নটাই এখন বড় করে দেখা দিয়েছে।