মেসির কলকাতা অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, ভিড় সরাতে পুলিশের মৃদু বলপ্রয়োগ

নিজস্ব চিত্র

বিশ্বফুটবলের মহাতারকা লিওনেল মেসিকে এক ঝলক দেখার উন্মাদনায় কলকাতায় যে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছিল, তা মুহূর্তের মধ্যে বদলে গেল বিশৃঙ্খলায়। শহরের এক নামী অনুষ্ঠানস্থলে মেসিকে ঘিরে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে আচমকাই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। প্রবল ভিড় সামলাতে গিয়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে থাকলে শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ মৃদু বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হতে শুরু করে। আমন্ত্রণপত্র ও প্রবেশপাস থাকা সত্ত্বেও বহু দর্শক ভিতরে ঢুকতে না পারায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সময় নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও ভিড়ের চাপে তা ব্যর্থ হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশ প্রথমে মাইকে বারবার শান্ত থাকার আবেদন জানায়। কিন্তু উত্তেজিত জনতার একাংশ নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা করলে বাধ্য হয়েই পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে। পুলিশ সূত্রের খবর, সামান্য বলপ্রয়োগ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়, যাতে কারও কোনও গুরুতর আঘাত না লাগে।


ঘটনার জেরে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠানসূচি ব্যাহত হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অনুষ্ঠান ফের শুরু হয়। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, ভিড়ের চাপ প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি হওয়াতেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলেও দাবি করা হয়েছে।

কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘কারও ক্ষতি হোক, সেটা আমরা চাইনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে।’ ঘটনায় বড়সড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। তবে হুড়োহুড়ির ঘটনায় জখম কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, মেসিকে ঘিরে কলকাতার মানুষের আবেগ যে কতটা গভীর, এই ঘটনার মধ্য দিয়েই তা ফের সামনে এল। তবে সেই আবেগের সঙ্গে স্বচ্ছ পরিকল্পনা ও দায়িত্বশীল আয়োজন না থাকলে কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ বার্তা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।