ভারতীয় ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বাংলার ফুটবলাররা: অমলরাজ

রণজিৎ দাস

ভারতীয় ফুটবল ফিফা র্যা ঙ্কিংয়ে যেভাবে নিচের সারিতে জায়গা করে নিচ্ছে তা খুবই বেদনা দায়ক। মনে রাখতে হবে সিনিয়র ও যুব দলের পারফরমেন্স নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যদের আলোচনা বসতে হবে। ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ভিক্টর অমলরাজ এমনই ভাবনার কথা প্রকাশ করেছেন। তরুণ খেলোয়াড়দের বিকাশের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা এবং তৃণমূল স্তরের প্রশিক্ষণকে শক্তিশালী করার সুপারিশ করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় সিনিয়র দল ও জুনিয়র দলের নতুন কোচ নেওয়া হয়েছে। খালিদ জামিল ও বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজকে। বিবিয়ানো জুনিয়র দল নিয়ে সাফল্য পেয়েছেন। সাফ গেমসের পর তার প্রশিক্ষণে ভারতীয় দল এশিয়ান কাপের মূলপর্বে পোঁছে গেছে। ওরা ইরানের যুব দলকে হারিয়ে দিয়েছে। খুব ইতিবাচক দিক। দীর্ঘসময় আমাদের ফুটবল ফেডারেশনে কোর্টের নানা নির্দেশ নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। সিনিয়র দল নিয়ে খালিদ জামিল তার পরিকল্পনায় পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় এখনো পায়নি। এবার সে কিছুটা সময় হাতে পাবে। তাকে অন্ততঃ ২ বছর তো সময় দিতেই হবে। আমাদের দেশে যুব ফুটবলারদের জন্য ভালো অ্যাকাডেমি নেই এতগুলো রাজ্য ফুটবল ফেডারেশন আছে, সকলের একটা করে অ্যাকাডেমি হলেও দেশের অনেকগুলো স্টেডিয়াম হতে পারে। এখন সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। কেন্দ্র সরকারের ভূমিকা বর্তমানে সময়ে নতুন দিশা দেখাতে পারে। আইএসএল ও আইলিগ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আইএসএল যারা পরিচালনা করছেন, তারা আইলিগের টিমের সঙ্গে প্রমোশন ও রেলিগেশনের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। স্থিতিশীল লিগের জন্য তারা ভালো ক্লাবদল চাইছে। যারা আইএসএলে মানাতে পারবে। এভাবে পারস্পরিক দর কষাকষি হয়েছে। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে একটা ইতিবাচক ফলাফল হতে পারে।’ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে জয়ের পর আমাদের দেশের ফুটবলের উপর প্রভাব পড়েছে। দেশের অন্যান্য খেলার মত ফুটবল কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।


এই প্রসঙ্গে ভারতের মিডফিল্ড জেনারেল অমলরাজ বললেন, ‘কাগজ খুললেই ক্রিকেটের খবর। ভারতীয় ফুটবলের খবর প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে,পরিবারের থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি ফুটবলের উপর ফোকাস করা খুব কঠিন হচ্ছে। এশিয়া মহাদেশে কাতারের মত বহু দেশে ফুটবলে বিনিয়োগ হচ্ছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দারুন কাজ হচ্ছে। একদিকে বিনিয়োগ ও অপরদিকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ভারতীয় ফুটবল এক্ষেত্রে নিশ্চয়ই পিছিয়ে থাকছে। এতে আমাদের যুব ফুটবলের উন্নতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এরমধ্যে ভারতের যুবদল কোয়ালিফাই করলো। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, এই ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। আইএসএল ও আইলিগের ক্লাবগুলো তাদের যুব ফুটবলে নজর দিক। এআইএফএফ অ্যাকাডেমি তাতে শক্তিশালী হবে। ভালো মানের যুব ফুটবলারদের সহজে পাওয়া যাবে।’

ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী ভিক্টর অমলরাজ দীর্ঘদিন বাংলায় খেলেছেন। বাংলার তিন বড়দলেই তিনি দাপটের সঙ্গে ফুটবল খেলেছেন। তিনি মনে করেন,‘ভারতীয় ফুটবলে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। তিন বড়দলের যুব টিমকে সর্বভারতীয় স্তরে আরো দাপট দেখাতে হবে। অনূর্ধ-১৭ দলের বাঙালি গোলকিপার রাজরুপ সরকার ও স্টপার অভিষেক মন্ডল দারুন পারফরম্যান্স করল। এভাবে আরও বাংলার ছেলেদের উঠে আসতে হবে, তাতে ভারতীয় ফুটবলে
ভালো হবে।’