নামেই বেঙ্গল ফুটবল লিগ, আসলে বিদেশিদেরই প্রাধান্য

সামনেই শুরু হতে চলেছে বেঙ্গল ফুটবল লিগ। কিন্তু এই ফুটবল লিগে বিশেষ জায়গা করে দেওয়া হয়েছে বিদেশি খেলোয়াড়দের। আইএফএ-র পরিচালিত এই ফুটবল প্রতিযোগিতায় অবশ্যই যে একাদশ নিয়ে দল গঠন করা হবে, সেই দলের ভূমিপুত্রদেরই জায়গা দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আইএফএ-র কর্মকর্তারা কলকাতা ফুটবলে দ্বিতীয় ডিভিশন থেকে চতুর্থ ডিভিশন পর্যন্ত ভূমিপুত্রদেরই খেলার ছাড়পত্র দিয়েছে। তাই যদি হয়, বেঙ্গল ফুটবল লিগ যেখানে নাম দেওয়া হয়েছে, সেখানে সব ভূমিপুত্রদেরই জায়গা কেন দেওয়া হবে না? জেলার বিভিন্ন স্টেডিয়ামে এই খেলাগুলি অনুষ্ঠিত হবে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বলতে পারা যায়, জেলাকেন্দ্রিক দলগুলিকে অবশ্যই বাংলার ছেলেদের পাশে নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত ছিল জেলার ফুটবলারদের চার থেকে পাঁচজনকে জায়গা দিতে হবে।

এদিকে আইএফএ-র কর্মকর্তারা বড় গলায় বলছেন, বাংলার ছেলেদের যদি তুলে আনতে হয়, সেক্ষেত্রে জেলার দিকে নজর দিতে হবে। তাহলে কেন জেলার ছেলেদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না? এই খেলার প্রসার ঘটাতে বিদেশিরাই বাংলার দায়িত্ব নেবেন? অবশ্য কোন বিদেশিরা খেলবেন বিভিন্ন দলে, তাঁরা কতখানি দক্ষ, সেটা বিচার কে করবেন? আইএফএ-কে আরও দায়িত্ব নিয়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু করা উচিত। শোনা যাচ্ছে কলকাতা ফুটবল লিগে বেটিংয়ে থাকা সন্দেহভাজন ফুটবলাররা বিভিন্ন দলে খেলবেন। তাহলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই খেলায় খেলোয়াড়দের যে দক্ষতা থাকা উচিত, সেই সব খেলোয়াড়রা তাঁদের সেরা খেলা উপহার দিতে পারবেন কি?

আবার ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছিলেন, কলকাতা ময়দানে যেভাবে রেফারিরা দলগুলিকে খেলাচ্ছেন, তা সঠিক পথে নয়। উন্নত মানের রেফারি নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আইএফএ কী ভূমিকা নেবে? এটা মনে রাখতে হবে, ভালো রেফারিং না হলে খেলার মান কখনওই উচ্চপর্যায়ে পৌঁছয় না। পাশাপাশি, বলতে হবে, যে সমস্ত খেলোয়াড়রা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন, তাঁদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।


সম্প্রতি সুপার কাপ ফুটবলের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি হয়েছিল এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গল দলে বাংলার কোনও ফুটবলারকে দেখতে পাওয়া গেল না। যাঁরা খেললেন, তাঁরা বিদেশি অথবা অন্য রাজ্যের ফুটবলার। তাহলে ধরে নিতে হবে বাংলার কোনও ফুটবলার নেই, যিনি ইস্টবেঙ্গলে খেলার মতো যোগ্যতা রাখেন। গতবছর সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলার কয়েকজন খেলোয়াড়কে ইস্টবেঙ্গল সই করালেও তাঁদের সেইভাবে ব্যবহার করা হয়নি।

কলকাতা ফুটবল লিগে যে কয়েকটা ম্যাচ খেলেছেন, কিন্তু তাঁদের প্রথম সারির প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য রাখা হয়নি। কিন্তু অতীতে দেখা গিয়েছে, বিদেশি দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশে কম করে সাতজন খেলোয়াড় নিয়মিত খেলেছেন। তাঁরা যদি বিদেশিদের বিরুদ্ধে খেলতে পারেন, তাহলে কেন বর্তমান বাংলার ফুটবলাররা সেই জায়গা নিতে পারছেন না? তার উত্তর কী হবে? এটা মনে রাখতে হবে, বাংলার ফুটবলাররা যদি তিন প্রধানে সেইভাবে জায়গা না পান, তাহলে বাংলার ফুটবলে উন্নতি হওয়া অসম্ভব। এখন যেভাবে ফুটবলারদের নিয়োগ করার জন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হচ্ছে, তাতেই সর্বনাশ ডেকে আনছে বাংলার ফুটবলে।