মেলবোর্নের উইকেটের চরিত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ

ফাইল চিত্র

চলতি সিরিজের চতুর্থ টেস্ট ম্যাচে শেষ হাসি হাসতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। ১৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল ইংল্যান্ড। চার উইকেটে জিতে যাওয়া মাত্র দু’দিনেই শেষ হয়ে যাওয়া এই ম্যাচটি ছিল ইংল্যান্ডের অস্ট্রেলিয়ায় ১৯তম চেষ্টায় প্রথম সাফল্য। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দর্শকে ঠাসা গ্যালারির সামনে প্রথম দিনে ২০টি উইকেট পড়েছিল। আর দ্বিতীয় দিনে পড়ল ১৬টি। ফলে চার ইনিংসে ৩৬টি উইকেট দু’দিনে পড়েছে। ব্যাটসম্যানরা মেলবোর্নের মাঠে সমস্যায় পড়েছিলেন খেলতে। তাই পিচ নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বোলাররা যখন দুরন্দ গতিতে বল করছেন, তখন ব্যাটসম্যানদের টিকে থাকাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা এই উইকেটে দিশেহারা হয়ে গেলেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও নিজেও দু’দিনে টেস্ট শেষ হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে হ্যারি ব্রুক ইংল্যান্ডের হয়ে ম্যাচ জেতানোর পর ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে দুই দলের অধিনায়কই পিচ নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, পিচ বোলারদের দিকে অতিরিক্ত ঝুঁকে ছিল। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্ব দেন তিনি। যাঁরা শুরুতেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে বল তুলনায় নরম করে তোলেন এবং সেই কারণেই চতুর্থ ইনিংসে তাদের লক্ষ্য তাড়া করার কাজ সহজ হয়। পুরস্কার বিতরণীতে স্মিথ আরও বলেন, ‘খুব দ্রুত ম্যাচ শেষ হয়েছে। দুই ইনিংস মিলিয়ে যদি আমরা আরও ৫০–৬০ রান করতে পারতাম, শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকতাম। ওরা খুব আক্রমণাত্মকভাবে খেলেছে, বল নরম করেছে। পুরো ম্যাচ জুড়েই পিচ বোলারদের সাহায্য করেছে। শুধু শেষ ইনিংসে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারের জোরালো শটে বল নরম হয়ে গিয়েছিল। তখনই শুধু ব্যতিক্রম হয়েছে বলে মন হল।’

বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৫২ ও ১৩২ রানে অলআউট হয়। কোনও ব্যাটসম্যানই অর্ধশতরান করতে পারেননি। ফলে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে গেলেও, তুলনামূলক সহজ লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নামতে পেরেছে ইংল্যান্ড।


টপ অর্ডারের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটেই রান তুলে নেয় তারা। পিচ প্রসঙ্গে স্মিথ আরও বলেন, ‘বোলারদের জন্য একটু বেশিই সহায়ক ছিল, কেউই ঠিকমতো সেট হতে পারেনি। দু’দিনে ৩৬টা উইকেট পড়লে সেটা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। যতটা চেয়েছিলেন, তার থেকেও বেশি সাহায্য করেছে পিচ। ঘাস যদি ৮ মিলিমিটারে নামানো যায়, হয়তো ভারসাম্য একটু ভাল হবে।’

ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসও স্বীকার করেন, এই পিচে ব্যাট করা মোটেই সহজ ছিল না। তাঁর মতে, মিচেল স্টার্ক ও স্কট বোল্যান্ডের মতো বোলারদের বিরুদ্ধে একমাত্র উপায় ছিল আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে দ্রুত রান তোলা। স্টোকস বলেন, ‘ম্যাচটা খুব ছোট হল। ব্যাট করা ভীষণ কঠিন ছিল এই পিচে। আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পিচটা স্পষ্টতই বোলারদের পক্ষে ছিল। আজ যেভাবে আমরা লক্ষ্য তাড়া করেছি, সেটাই সঠিক। ভাল বোলারদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ওদের বিপজ্জনক জায়গায় বল ফেলতে দেওয়া যায় না। আমরা সেটা দারুণভাবে সামলেছি। সাহস দেখিয়েছি, নির্ভীকভাবে খেলার চেষ্টা করেছি।’