প্রহরশেষের রাঙা আলোয়

কাল্পনিক চিত্র

তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

১৫.
সুরঞ্জনা
আষাঢ় কোথা হতে আজ পেলি ছাড়া
চিত্রজিতের মতিগতি খুব ভাবাচ্ছে সুরঞ্জনাকে৷ দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে৷ চিত্রজিৎ সন্দেহ করছে তাকে৷ অথচ অলমিতি ফ্ল্যাটে এলেই তাকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷
‘ইছামতী সংগীত সংস্থা’র অনুষ্ঠান পিছিয়ে গেল আরও কয়েকটা দিন৷ হওয়ার কথা ছিল ‘এসো হে বৈশাখ’৷ চৈত্র পেরিয়ে পায়ে-পায়ে আসছে বৈশাখ৷ বৈশাখের গানে একদিকে রুদ্রমৌনী ভৈরব রূপ, অন্যদিকে ঝড়ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ তাণ্ডবের রূপ৷ সেভাবেই তমোনাশকে নিয়ে তৈরি হচ্ছিল সুরঞ্জনা, কিন্তু  কর্ণধার সোমরূপ গাঙ্গুলি বললেন, সুরঞ্জনাদি, বৈশাখ তো শেষ হওয়ার পথে৷ আমরা এখানে রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তী করছি৷ বরং আপনাদের আমন্ত্রণ জানাই ‘বর্ষামঙ্গল’ অনুষ্ঠানের জন্য৷ আমরা তারিখ নির্ধারণ করে আপনাকে জানাচ্ছি৷
সুরঞ্জনা বলল, বর্ষা, সে তো অনেক দেরি৷ সবে তো বৈশাখের মাঝামাঝি৷
—আমরা জ্যৈষ্ঠের প্রথমেই বর্ষাকে আবাহন জানাব৷ মাঠে বীজতলা হলুদ হয়ে আসছে, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই৷ তাই ‘বর্ষামঙ্গল’৷ আপনারা সেভাবেই রবীন্দ্রগান নিয়ে তৈরি হয়ে আসবেন?
সুরঞ্জনা হঠাৎ বলল, সোমরূপ, তুমি যখন বলবে, যে কোনও ধরনের গান বলবে, অনুষ্ঠানে গেয়ে দেব৷
বলে হেসে বলল, আমি বর্ষার গান গাইলে নিশ্চয় বৃষ্টি আসবে৷ তোমরা প্যান্ডেল সেভাবেই বাঁধবে৷ মানুষ ভিজে না যায়।
সোমরূপ বিগলিত হয়ে বলল, বৃষ্টি হলে মানুষ আশীর্বাদ করবে আপনাদের৷
—সোমরূপ, আমি রবীন্দ্রনাথকে হৃদয়ে নিয়ে বাস করি৷ রবীন্দ্রগানই পারবে মানুষকে সুরাহা দিতে৷ সঙ্গে আর এক রবীন্দ্রপ্রেমী তমোনাশ গুপ্ত৷
—তা জানি, সুরঞ্জনাদি৷ এখন আপনাদের জুটি সারা বাংলা জয় করে ফেলেছে৷
তবু সুরঞ্জনা জানে, সে নিজে তৈরি হয়ে থাকলেও প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে তমোনাশকে নিয়ে খুব খাটতে হয় তাকে৷ গান বাছতে হয় ঋতু অনুযায়ী, সঙ্গে নজর রাখতে হয় শ্রোতাদের অভিরুচির দিকে৷
‘ইছামতী’র অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে কলকাতায় রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তী নিয়ে ব্যস্ত থাকল সুরঞ্জনা৷ রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত বিশাল অনুষ্ঠানে প্রতি বছর আমন্ত্রণ পায়৷ জোড়াসাঁকো থেকেও পায়৷ এবারও এল৷ কিন্তু তমোনাশ কোথাও ডাক না-পাওয়ায় খুব মুষড়ে পড়ল৷ ফোন করে বলল, ‘খুব মন খারাপ, সুরঞ্জনাদি৷’ সুরঞ্জনা বলল, তোমার কেরিয়ার সবে শুরু৷ তাতেই তোমার এখন অনেক খ্যাতি৷ তবে এত সহজে মন খারাপ করতে নেই৷ তোমার সামনে এখনও লম্বা পথ৷ বরং বর্ষার গান নিয়ে ভাবতে থাকো৷
কখনও শেখাল:
বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান
  আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান৷
তমোনাশ বলল, এখন শ্রাবণের গান শুনবে শ্রোতারা?
সুরঞ্জনা বলল, তমো, বাংলার বর্ষা এক দীর্ঘস্থায়ী ঋতু৷ বৈশাখের কালবৈশাখী দিয়ে তার শুরু, বর্ষার শেষ হয় ভাদ্র পেরিয়ে ইদানীং আশ্বিন পর্যন্ত৷ আমরা এমনভাবে গানগুলো সাজাব, যাতে আষাঢ়ের আবাহন থেকে শ্রাবণের ধারা— এই পর্যন্ত থাকবে৷ বলে গুনগুন করে গাইল:
আষাঢ়, কোথা হতে আজ পেলি ছাড়া৷
মাঠের শেষে শ্যামল বেশে ক্ষণেক দাঁড়া৷৷
—এই গানটি মিশ্র মেঘমল্লার রাগে, তাল দাদরা৷ আষাঢ় এখানে এক দামাল শিশু, হঠাৎ ছাড়া পেতেই সে দুর্বিনীত হয়ে উঠেছে৷ তাকে সবুজ বেশ ধরে দাঁড়াতে বলা হচ্ছে, কিন্তু সে কি অপেক্ষা করতে চায়?
তমোনাশ তখন বর্ষার গান তুলে নিচ্ছে একের পর এক৷
জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি সময়ে একদিন সকালে সুরঞ্জনাদের ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাঁড়াল ‘ইছামতী’ সংস্থার গাড়ি৷ আজকাল সারাদিনই চিত্রজিতের ঘরের দরজা বন্ধ থাকে, সেদিকে একবার দৃকপাত করে সুরঞ্জনা উঠল গাড়িতে৷ রানিকুঠি থেকে তমোনাশকে তুলে নিয়ে চলল তপসিয়া পার হয়ে হাইওয়ে বরাবর৷ সঙ্গে সুরঞ্জনার নিজস্ব হারমোনিয়াম৷
কিছুক্ষণ পর তমোনাশ বলল, সুরঞ্জনাদি, রাস্তাটা কিন্তু বেশ ভালো, কোনও ঝাঁকুনি হচ্ছে না৷
—রাস্তার দু’পাশটাও খুব সবুজ৷ কোথাও বড়ো বড়ো গাছ, কোথাও শুধু গুল্মলতা৷ দূরে সবুজ মাঠ৷ যেখানেই চোখ পড়ছে, লকলক করে বেড়ে উঠেছে ধানের বীজতলা, অপেক্ষা করছে কখন দু’পশলা বৃষ্টি হবে, বৃষ্টি হলে এই বীজ তুলে নিয়ে চাষিরা রোপণ শুরু করবে মাঠে মাঠে৷
পাশে বসা সুরঞ্জনার হাত চেপে ধরে তমেনাশ বলল, আমি তোমার চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি সব৷ আহ্, কতকাল পরে কলকাতার বাইরে বেরোতে পারলাম৷
জ্যৈষ্ঠের দুপুর, রাস্তায় আগুন ছুটছে, তবে  গাড়ির কাচ তুলে এসি চালু রয়েছে বলে বাইরের হলকার তাপ টের পাচ্ছে না ওরা৷ হঠাৎ তমোনাশ বলল, সুরঞ্জনাদি, তুমি তো উদ্যোক্তাদের বলেছিলে, তুমি বর্ষার গান গাইলে বৃষ্টি আসবে৷ আকাশের অবস্থা কীরকম?
সুরঞ্জনা জানালার কাচ সামান্য নামাতে গরম হলকা বয়ে গেল গাড়ির ভিতর, চিন্তিত কণ্ঠে বলল, যত দূর চোখে পড়ছে মাথার উপরে এখন ঝকঝকে নীল আকাশ৷
—কোথাও চিলতে মেঘও নেই?
—আপাতত চোখে পড়ছে না কিছু।
—কী হবে তা হলে? যদি বৃষ্টি না হয়!
সুরঞ্জনা বলল, আমি তো রবীন্দ্রনাথকে তখন থেকে ডাকছি৷ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘এই শ্রাবণের বুকের ভিতর আগুন আছে’৷ শ্রাবণে যদি আগুন থাকে, জ্যৈষ্ঠেই বা বৃষ্টি আসবে না কেন?
তমোনাশ চুপ করে থাকে৷
প্রায় তিন ঘণ্টা একনাগাড়ে চলার পর পৌঁছোতে পারল গন্তব্যে৷ তাদের অভ্যর্থনা জানালেন সংস্থার কর্ণধাররা৷ দু’জনকে বাংলোর ভিতরে নিয়ে গিয়ে সোমরূপ বলল, সরকারি বাংলো৷ বাইরের কাউকে দেয় না৷ শুধু আপনাদের নাম শুনে বলল, নিশ্চয়, নিশ্চয়৷
বাংলোটি প্রশস্ত, ভিতরে ঢুকেই প্রথমে একটি ছোটো মিটিংরুম, এক সেট সোফা ছাড়াও অনেকগুলি সবুজ চেয়ার৷ ড্রয়িংরুম পার হলে ভিতরে দু’টি মাত্র সুসজ্জিত মুখোমুখি ঘর৷ দুটি ঘরের মাঝখানে চমৎকার ডাইনিং৷ তার পিছনে কিচেন৷ বাংলোয় ঢোকার মুখেই একটি ছোটো ঘর, আউটহাউসের মতো, সেখানে থাকে বাংলোর চৌকিদার— বিষাদ৷ বেশ চালাকচতুর যুবক, তাকে দেখিয়ে সোমরূপ বলল, সুরঞ্জনাদি, যা লাগবে, বিষাদকে বলবেন, পলক না ফেলতে এনে দেবে আপনাদের৷
দু’জনকে মুখোমুখি দু’টি ঘরে ঢুকিয়ে দিল সোমরূপ, বলল, বিষাদ এখনই আপনাদের চা-জলখাবার এনে দিচ্ছে৷ তারপর দুটোয় লাঞ্চ৷ বিকেলে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আধঘণ্টা আগে আমি গাড়ি পাঠিয়ে দেব৷
একটু পরেই এসে গেল চায়ের ট্রে৷ চায়ের পর্ব শেষ হলে সোমরূপ বিদায় নিল৷ সুরঞ্জনা বলল, তমো, লাঞ্চ আসতে আরও ঘণ্টা দেড়েক৷ ততক্ষণে ড্রেস চেঞ্জ করে আমরা একটু বসি ড্রয়িংরুমে৷ গানগুলো একটু ঝালিয়ে নিই৷ লাঞ্চের পর বিশ্রাম নেব৷
একটু পরেই দু’জনে পোশাক বদলে এসে বসে মিটিংরুমের সোফায়৷ বিষাদকে বলতে সেন্টার টেবিলের উপর রাখল হারমোনিয়াম৷ সুরঞ্জনা কিছুক্ষণ চোখ বুঝে থেকে গাইতে শুরু করল:
     আষাঢ়, কোথা হতে আজ পেলি ছাড়া৷
মাঠের শেষে শ্যামল বেশে ক্ষণেক দাঁড়া৷৷
     জয়ধ্বজা ওই যে তোমার গগন জুড়ে৷
     পুব হতে কোন পশ্চিমেতে যায় রে উড়ে,
গুরু গুরু ভেরী কারে দেয় যে সাড়া৷৷
—তমো, ভাবো একবার বর্ষার তুমুল হয়ে ছুটে আসা৷ দামাল আষাঢ় হাতে জয়ধ্বজা নিয়ে ছুটে যাচ্ছে মাঠে, পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্তে৷ তার ছুটে চলার সময় গুরু গুরু শব্দে বাজতে থাকে ভেরী৷
তমোনাশ গানের কলিগুলো বার দুই গেয়ে বলল, সুরঞ্জনাদি, আপনার কি মনে হয় বৃষ্টি আসবে?
সুরঞ্জনা কোনও উত্তর না-দিয়ে গাইতে থাকে পরের কলিগুলো:
নাচের নেশা লাগল তালের পাতায় পাতায়,
হাওয়ার দোলায় দোলায় শালের বনকে মাতায়৷
আকাশ হতে আকাশে কার ছোটাছুটি,
বনে বনে মেঘের ছায়ায় লুটোপুটি—
    ভরা নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে কে দেয় নাড়া৷৷
—আষাঢ়ের এই নাচের নেশা লাগে তালগাছের পাতায় পাতায়৷ হাওয়ার দোলায় মাতিয়ে তোলে শালবনকে৷ আকাশের এ-কোণ ও-কোণ জুড়ে দাপাদাপি করছে অঝোর মেঘপুঞ্জ৷ মেঘের ছায়া লুটোপুটি করছে বনে বনে৷ কে সাড়া দিচ্ছে ভরা নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে৷
তমেনাশ হঠাৎ বলল, সুরঞ্জনাদি, আমার মনে হল বাইরের আকাশে মেঘ ডাকছে।
সুরঞ্জনা হেসে বলল, আমি তো একটু আগে দেখে এলাম গোটা পৃথিবী জুড়ে খটখটে রোদ্দুর৷
তমোনাশ সঙ্কুচিত হয়ে বলল, তা হলে আমি ভুল শুনেছি৷
সুরঞ্জনা বলল, তুমি ভাবছ উদ্যোক্তারা আমাদের নিয়ে এসেছেন শুধুমাত্র বৃষ্টি আনতে। শ্রোতারা বুঝি গান শুনতে আসবে না! তারা আমাদের জুটির গান শুনতেই আসবে৷ বৃষ্টি এলে তা হবে উপরি পাওনা৷ তবে রবীন্দ্রগানে বর্ষাঋতুর একটা আলাদা ব্যঞ্জনা আছে৷ বর্ষাঝরনের শব্দের মধ্যে কত সংগীত নিহিত আছে, তা নিশ্চয় খেয়াল করেছ। কখনও ফিসফিস, কখনও ইলশেগুঁড়ি, কখনও টিপটিপ, কখনও ঝিরঝির, কখনও ঝমঝম৷ প্রত্যেক শব্দের মধ্যে ছন্দের কত বৈচিত্র্য৷ কোনও বর্ষার রাতে বিছানায় শুয়ে আমি অনুভব করি তার ভিতরকার লয়, মীড়, মূর্ছনা৷ এক-এক সময় এক-এক রবীন্দ্রগান আমার ঠোঁটের ডগায় আসে৷ আবার কখনও মুষলধারায় বৃষ্টি হলে ভেসে যায় দেশ৷ তখন মনে হয় এই বৃষ্টির মধ্যে শুনতে পাচ্ছি এক যন্ত্রণার ধ্বনি৷
—সুরঞ্জনাদি, আমি কিন্তু শুনতে পাচ্ছি কোন সুদূর থেকে ভেসে আসছে মেঘের মৃদু ডাক৷
—তমো, রবীন্দ্রনাথের এই গানটা, ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ লিখেছিলেন মৃত্যুর দু’বছর আগে৷ গানটির সুর মেঘমল্লার রাগে, কিন্তু প্রথা ভেঙে কবি তাতে প্রয়োগ করেছেন গান্ধার৷ তাতেই বৈচিত্র্য এসেছে গানটির সুরে৷ প্রকৃতি কবিকে দিয়েছে প্রথম কদম ফুল, তার বিনিময়ে ‘আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান’৷ প্রথমটি, কদমফুল নেওয়া যায় অঞ্জলি পূর্ণ করে, রাখা যায় ফুলদানি ভরে, কিন্তু  দ্বিতীয় লাইনে, কীভাবে নেওয়া যাবে শ্রাবণের গান, এখানেই গানটির মধ্যে এক অলৌকিক চেতনা৷ কিংবা ধরো পিলু রাগের এই গানটা, ‘যেতে দাও যেতে দাও গেল যারা’—
সুরঞ্জনাকে তখন বর্ষার গানে পেয়েছে, কিন্তু আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটাল বিষাদ। বলল, ম্যাডাম, লাঞ্চ দিয়েছি ডাইনিং রুমে৷
দু’জনে তখন আস্বাদন নিচ্ছে মাঠ থেকে আনা টাটকা শাকসবজির, ইছামতী থেকে আনা রকমারি মাছের পদ৷ খাওয়া শেষ হতে বেলা তিনটে৷ সুরঞ্জনা বলল, তমো, আমি ঘণ্টাখানেকের জন্য বিশ্রাম নিচ্ছি৷ সোমরূপ গাড়ি পাঠাবে বিকেল সাড়ে চারটেয়৷
—কত দূরে অনুষ্ঠানের মঞ্চ?
—বলল, এখান থেকে গাড়িতে মিনিট দশেক লাগবে৷
নিজের ঘরে এসে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত হল সুরঞ্জনা৷ চমৎকার ধবধবে সাদা চাদর পাতা বিছানা৷  এরকম বিছানাই পছন্দ সুরঞ্জনার৷ আপাতত কিছুক্ষণ বিশ্রাম৷ ঘরের দুই দেওয়ালে প্রমাণ আকারের দু’টি ছবি৷ দুটোই ল্যান্ডস্কেপ৷ দুটোই ইছামতীর দৃশ্য৷ একটাতে সবুজ পাল-তোলা নৌকো ভেসে চলেছে দূরে— ক্রমশ সরু হয়ে আসা স্রোতধারায়৷ অন্যটিতে প্রশস্ত ইছামতীর ওপারে সবুজ তটরেখা৷ সম্ভবত ওপারে সেই বাংলাদেশ৷
ছবি দু’টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার মধ্যে বোধহয় চোখ লেগে এসেছিল সুরঞ্জনার৷ হঠাৎ দরজায় টক-টক শব্দ শুনে তন্দ্রা ভেঙে উঠে বসে বিছানায়৷ বিষাদ এসে জানায়, গাড়ি এসে গিয়েছে৷ আপনাদের তৈরি হয়ে অনুষ্ঠানে যেতে বলেছেন সোমরূপবাবু৷
তমোনাশকে নিয়ে সুরঞ্জনা যখন গাড়িতে উঠতে গেল, দেখল, উত্তর আকাশে কালো মেঘ৷ প্রখর জ্যৈষ্ঠের দিনেও হাওয়ায় সামান্য ঠান্ডা আমেজ৷ শোনা গেল গুরু গুরু শব্দও৷
তমোনাশ উল্লসিত হয়ে বলল, সুরঞ্জনাদি, তোমার কথা শুনেছেন রবীন্দ্রনাথ৷
(ক্রমশ)
অলঙ্করণ: সোময়েত্রী চট্টোপাধ্যায়