ছেলের দল
সৌমেন্দ্রনাথ হালদার
তেরঙ্গাটা ঊর্ধ্বে তুলে
ছুটছে দেখো ছেলের দল
দুরন্ত সব কচিকাঁচা,
বুকে ওদের অসীম বল।
চেয়ে দেখো চারিদিকে
নেমেছে আজ প্রাণের ঢল।
গড়বে ওরা নতুন এ দেশ
অন্ধকারের থাকবে না লেশ
যতই আসুক ঝড় বা তুফান,
উথলে উঠুক সাগর-জল,
দীপ্ত শিখায় জ্বলবে ওরা
ফেলবে না আর অশ্রু-জল।
সোনার এ দেশ গড়বে ওরা
আলোর পথিক ছেলের দল।
শিল্পী হারায়
রৌদ্র ছায়ায়
সমরেশ মণ্ডল
ওগুলো কী মাথার উপর?
বাবরি চুল!
পারলে দেখো পাথরেও তো
ফোটায় ফুল।
নিখুঁত দেখো উঠছে ফুটে
নাকের পাটা,
চকচকে ওই অসুর মামার
নরম গা-টা!
সবাই জানি ছেনি হাতুড়ি
ভালোবাসার
ফসল ফলে চেতনাতে,
ঝলসে কাঁসার।
ধাঁধিয়ে চোখ দেখাচ্ছে খুব
নিখুঁত গড়ন,
আসলে পাথর দেখাচ্ছে তা
তামা-ভরন।
শিল্প হাতে পাথর কুঁদে
কতো মায়ায়
স্বপ্ন চোখের শিল্পী হারায়
রৌদ্র ছায়ায়।
কোথায়
সুশান্ত সেন
কোন বাজারে কিনলে পরে
বেগুন হবে সস্তা?
সেই বাজারে কিনব বেগুন
গোটা তিনেক বস্তা।
কোন নদীতে জাল ফেললে
ইলিশ মাছের ঝাঁক
উঠবে বেবাক, খুশির চোটে
সবাই হতবাক।
কোন বাগানে গাছ পুঁতলে
আপনা থেকে বাড়বে
আম কাঁঠাল পেয়ারা লিচু
নিজের থেকেই জাগবে!
অনেক ভেবে নামতা পড়ে
যাত্রা করি শুরু
মেঘের পরে মেঘ জমেছে
আকাশ গুরুগুরু।
মন চঞ্চল
কোহিনূর কর
মন চঞ্চল বন্ধুর দল
কোথায় যাবি তোরাই বল,
চল না কোথাও দূরে।
মধ্যিরাতে ঘুম আসে না
মন মাতানো গান আসে না,
তাল কেটে যায় সুরে।
খোলা ওই নীল আকাশে
মেঘেদের রূপ যে ভাসে,
সুরে আজ খুশির কলতান।
আমার এই মন মজেছে
বাগানের সবুজ গাছে,
ভরে যায় আমার দু’চোখ কান।
ভরা আজ আকাশ বাতাস,
শিউলি জুঁই রাশ-রাশ,
আমি যাই গন্ধে পাগল হয়ে।
তোরা আজ আমার সাথে
গলা দে মন মাতাতে,
দিয়ে যা সবার হৃদয়ছুঁয়ে।
বাঘের ভয়
পার্থ প্রতিম সিংহ
ভয়ে সবাই দিশেহারা
চেঁচিয়ে পাড়া হচ্ছে সারা
মনে সবার ধন্দ রে!
দেখেছে নাকি পাড়ার গুপি
বাঘ ঢুকেছে চুপিচুপি
ধর-এর ঘরের অন্দরে!
বন বিভাগে খবর করো
একটুখানি সবুর করো
ব্যাপারখানা মন্দরে!
তারপরেতে খবর এলো
মিটে গেল তালগোল-ও
বাঘটা নাকি অন্ধরে।।
মেঘবালিকা
সুব্রত চৌধুরী
ভেজা আকাশ, দমকা বাতাস
দুলছে কদম জুঁই,
ইচ্ছে করে দু’হাত দিয়ে
মেঘের ঘড়া ছুঁই।
হঠাৎ দেখি মেঘের ঘড়া
খালি করে জল,
নদীর দুকূল উপচে পড়ে
ছল ছলা ছল ছল।
টাপুর টুপুর ছন্দে বাজে
মেঘবালিকার মল,
মন-বাগিচায় ফোটে খুকুর
খুশির শতদল।
থেকে থেকে সুবাস মেখে
বিষ্টি রোদের ক্ষণ,
বর্ষারানির রূপে মজে
মনটা উচাটন।
আষাঢ়ে
নামলে বাদল
সুজন দাশ
আষাঢ়ের বাদল ধারা
রিমিঝিম ছন্দ সুরে,
গেয়ে যায় একটানা গান
ছোটে জল কাছে দূরে।
ফোটে ফুল কদম কেয়া
ডাকে মেঘ গুরুগুরু,
প্লাবনে রূপ নিলে বেশ
কাঁপে বুক দুরুদুরু।
ডাকে ব্যাঙ ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর
ডোবা আর পুকুর বিলে,
ভয়ে রয় চাঁদ মামা বেশ
এসে মেঘ কখন গিলে?
থাকে মেঘ মুখ করে ভার
রবি রয় ছবির মত,
ঢেলে রোদ হাসে না আর
জোরও তার রয়না তত।
পাখি রয় কষ্টে ভীষণ
পালকে মুখ গুঁজে তার,
ছোটে মাছ উল্লাসে খুব
সীমানা নেই কাঁটাতার!
ছোট্ট মেনি
অভিজিৎ শেঠ
চুপটি করে বসে দেখি—
বেজায় ক্ষেপে ছোট্ট মেনি।
এদিক ওদিক ছুটছে বেগে,
খুব সহজে অল্প রেগে।
মুখটা করে গোল্লা গোল,
ধপাস করে উঠলো কোল।
নাক গুঁতিয়ে বলল রাগে—
‘আমার কথা শোনো আগে!’
চোখ টিপে তাকাই হেসে,
রাগ ভুলে যায় সবার শেষে।