বুলুর দাদু
সেলিমা রহমান
বুলুর দাদু সদাই হাসে
একটুও নেই রাগ,
হাসতে হাসতে ঠাট্টা করে
ভাগ ব্যাটা তুই ভাগ!
বয়স কত, খুব বেশি না
এখন আশি পার,
সদাই বলে বাঁচবো বোধহয়
বছর ষাটেক আর।
এমন কথা শুনতে পেয়ে
আমরা সবাই হাঁ,
দেড়শো বছর হোক তো আগে
নইলে যাচ্ছি না।
কিরণ
সায়নী সাহা
চুপ চুপ দিস ডুব ওই সাঁঝ নামলে
কই যাস রোজ তুই সংসার সামলে?
সুনসান চারদিক রাত চায় থমকে
সব খুব চিন্তায়, চটকায় ঘুম কে?
দিনভর তেজ খুব, পুব দিক তোর বাস,
পশ্চিম দেয় ডাক, রাতভর কই যাস?
ভয় ভয় ঘুম হয় বোধ হয় দরজায়
চোখ লাল, মুখ ভার খুব জোর গর্জায়।
অমনি চাঁদ কয়, দেখ মোর জ্যোৎস্না
ভিন্ দেশ দেয় ডাক, তাই তার দোষ না।
তুই মাখ জ্যোৎস্না, আমি নিই কর
চারপাশ চমকায়, আলো তোর ঘর।
দুইটি শালিক
শ্যামল বণিক অঞ্জন
দুইটি শালিক উড়ে
যায় চলে যায় দূরে
আবার এসে ছাদে বসে
ডাকে মধুর সুরে!
দুইটি শালিক ছাদে
হাসে আবার কাঁদে
মিলে মিশে মনের সুখে
নিজের বাসা বাঁধে!
দুইটি শালিক সুখী
ভাবনা জীবনমুখী
স্বপ্নগুলো বুকে পুষে
চায় না নিতে ঝুঁকি!
বৃষ্টি মেয়ে
সুজন দাশ
বৃষ্টি মেয়ে বৃষ্টি মেয়ে,
আয় রিমিঝিম গানটি গেয়ে।
শব্দ করে টাপুর টুপুর,
যা বাজিয়ে জলের নুপুর।
দে মুছে তুই তীব্র খরা,
সৃষ্টিসুখে নাচুক ধরা!
ফিরবে তাতে সজীবতা
ভাসবে সুখে বৃক্ষলতা।
আসুক ফিরে স্বস্তি প্রাণে,
মাতবি যে আয় ছন্দে গানে।
পুড়ছে সবাই দাবানলে,
দে ভাসিয়ে শীতল জলে।
বৃষ্টি মেয়ে বৃষ্টি মেয়ে,
আসলে সুখে উঠবো নেয়ে!
ঢাললে তোরই জলের ধারা,
পাবে প্রাণে বাঁচার সাড়া।
ছায়া
উৎপলকুমার ধারা
সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে যেই
নামি আমি নীচে
সেও সিঁড়ি ভেঙে নামে
ঠিক আমার পিছে!
পড়ালেখা করি যেই
বসে পড়াঘরে
দেখাদেখি সেও দেখি
লেখাপড়া করে!
ছড়ার ছন্দে যেই
নাচি ধিন ধিন
নাচে সেও, থাকে পাশে
ঠিক সারাদিন!
যেই আমি ভাত খাই
সেও ভাত খায়
ঠিক আমার পিছু পিছু
ইস্কুলে যায়!
সরু সরু ঠ্যাং তার
বেশ মাথা মোটা
দাদা বলে, দূর বোকা
তোরই ছায়া ওটা!
ভোর-সংগীত
আভা সরকার মণ্ডল
শিউলি ফুলের ঘ্রাণে
পাড়া মাতোয়ারা
ছুটে আসে মৌমাছিরা
হয়ে দিশেহারা।
নীলাকাশে সূর্য ওঠে
ঝলমল করে
জাগে তারা, ছিল যারা
কাল ঘুমঘোরে।
সুর করে পাখি গায়
ভোর-সংগীত
কুয়াশার ডাকে যেন
আসে নেমে শীত।
এরই ফাঁকে খুকু সাজি
ভরে নেয় ফুলে
তাই দেখে প্রজাপতি
নাচে দুলে দুলে।