কবিতা গুচ্ছ

কল্পচিত্র

খোকার কবিতা
শীর্ষা

কবিতা মাকে খোকার কথা বলে,
কবিতা দেখায় রাজপ্রাসাদের ছবি!
কুটির জুড়ে হাজার মানিক জ্বলে!
মায়ের বুকে সাতমহলা সবই।

বাঁশির সুর ভাসছে বহু দূরে,
ঢোল নাকাড়া গমগমিয়ে বাজে!
মায়ের খোকা ভোরের ভৈরবে
নকশিকাঁথায় রাজার মতোই সাজে।


আকাশ জুড়ে ঘনিয়ে থাকা ভোর
কুটির ফুটোয় চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ে,
মায়ের নিশিজাগরণের কালো
খোকার দেহে মমতা হয়ে ঝরে।

মায়ের ব্যাধি, প্রবল অভাবজ্বর,
সবই যেন পালায় জলের তোড়ে;
দেবতারূপী শিশুর আগমনে
কুটির ওঠে আলোয় আলোয় ভরে।

ওরে খোকা, আমার পাগল খোকা,
ছড়াও আলো— দেহের সব অরূপ!
তোমার আগমনের গাথা দিয়ে
কুটির যে পায় রাজপ্রাসাদের রূপ।

 

সূর্য মামার হাসি
কাজল নিশি

পাকা ধানের ম-ম ঘ্রাণে
কৃষক মুখে হাসি
ভাটিয়ালি সুর তুলে যায়
রাখালিয়া বাঁশি।

বাঁশির সুরে হেসে ওঠে
আকাশ থেকে রবি
মুগ্ধ হয়ে লিখে ছড়া
পল্লী গাঁয়ের কবি।

ছন্দ ছড়া সুরের তালে
নাচে ফড়িংছানা
দারুণ দৃশ্য আঁকা হলো
খুকুর ষোলআনা।

 

বৃষ্টি দিনে
সৌমিত্র ঘোষ

বৃষ্টি যখন নামলো মাঠে
ঝপাৎ জলে ভিজছে সব,
আমি তখন উঠান জলে
নৌকো ভাসাই ভুলেই সব।

গাছের পাতায় জমছে হিরে
বৃষ্টি থেকে ধার নিয়ে,
আদুড় গায়ে রাখাল ছেলে
ফিরছে গরুর পাল নিয়ে।

ব্যাঙের ডাকে মাতাল হলো
আকাশ বাতাস ঘরবাড়ি
খোকন দেখে বেজায় খুশি
গুটোনো তার পাততাড়ি।

 

হাল ছাড়িনি
অরুণ গুপ্ত

ছড়া লেখায় হাত পাকাতে
কার না ইচ্ছা হয়
ছন্দ নিয়ে ধন্দে পড়ে
শুধুই শক্তিক্ষয়।
হাল ছাড়িনি চলছে লড়াই
ভাগ্য যদি যায় খুলে
পণ্ড হচ্ছে অন্য কাজ
সে কথাটি যাই ভুলে।
ছড়া যখন ছেপে বেরোয়
আশ না মেটে দেখে দেখে
কলম হয় আবার সাথী
সমস্ত কাজ ফেলে রেখে।

 

পরীর খুশি
সৌমেন্দ্র মুখোপাধ্যায়

ঘুমঘুমাঘুম রাত্রি নিঝুম
ফুলপরীদের জোছন সাজ,
একটি পরী বলল ডেকে,
আয় লো তোরা অনেক কাজ।

জিয়নকাঠি ছুঁইয়ে দিয়ে
ফুল ফোটাবো কুঁড়ির ’পর
ফুলকলিদের ফিসফিসানি
সইছে না আর ফোটার তর।

ফুটলে ফুলে গন্ধমধুর
জুটবে ভোরে অলির দল,
সেই ফুলেতে ধরবে আবার
হরেক রকম রসের ফল।

ফলপাকুড়ে পেট ভরাবে
পাখির ঝাঁক আর মানুষ সব,
ফিনফিনিয়ে চলল পরী
কাজের বেলা খুশির রব।