কবিতা গুচ্ছ

কাল্পনিক চিত্র

কোমল পরশ
সৌমেন্দ্র মুখোপাধ্যায়

শিশিরের কণা দেখি
জমে আছে ঘাসে,
মাঠঘাট ভরে আছে
সাদা সাদা কাশে।

রাতের শেফালি ফুল
ঝরেছে সকালে,
টুনটুনি উড়ে এসে
ঘোরে ডালে ডালে।


বাতাসে বইছে এক
কোমল পরশ,
মনেতে হঠাৎ জাগে
কেমন হরষ।

শরৎ মানেই জানি
শারদোৎসব,
ঢাকের বাদ্যি নিয়ে
খুশি কলরব।

সকলের ভালো হোক
মনে মনে চাই,
আনন্দে মেতে উঠি
আমরা সবাই।

 

হিজলগাছি যাও যদি
দীপঙ্কর গোস্বামী

শহর থেকে অনেক দূরে হিজলগাছি,
সেখানে এখন ইচ্ছে হলে যাও যদি—
দেখবে গ্রামের এদিকে পাহাড়, ওদিকে নদী;
কাশফুলেরা দোলায় মাথা কাছাকাছি!

পথটি গ্রামের রাঙামাটির আঁকাবাঁকা;
খুঁজতে পারো শেষটি কোথায়, নেই মানা—
সঙ্গ দেবে সবুজ টিয়া মেলে ডানা;
ছুটবে তুমি ওদের সাথেই, নয় একা!

ধানের খেতে হাওয়ার দোলায় নাচবে ধান,
কাঠবেড়ালি দু-পা তুলে দেখবে চেয়ে;
নীল আকাশের নীচে তোমায় দেখতে পেয়ে—
সূর্য হেসে ছড়িয়ে দেবে আলোর বান!

আনমনা মন করলে ব্যাকুল হৃদয়-বীণ,
গ্রামের মাঝে টাক ডুমা ডুম বাজবে ঢাক;
বলবে তুমি— থাক রে মন, গ্রামেই থাক,
হিজলগাছির পুজোয় এবার কাটাব দিন!

উড়বে বেলুন, ফাটবে বাজি, বাজবে শাঁখ,
অমনি তোমায় ধরবে এসে শিশুর দল;
বলবে তারা— আয় রে আয়, চল রে চল,
মন্ডপে আজ হিজলগাছির প্রসাদ চাখ!

 

ভয় পাস কেন?
কাজল আচার্য

আমি রনি জানি ঠিক
তোরা ভয় পাচ্ছিস।
তেঁতুল গাছের তলে
রাতে চেঁচাচ্ছিস।

চেঁচালেও নাকি সুর
শোনা যায় বেশ।
ন্যাড়া বাদে সকলের
টেনে ধরে কেশ।

ভয় ভয় করে যারা
কম শেখে দুনিয়ায়।
শিক্ষকদের থেকে
কাল যা শুনে আয়।

তাঁদের শেখানো বুলি
ভুলে যাস তোরা
মগডালে জল ঢেলে
কেটে দিস গোড়া।

 

ইচ্ছেপূরণ স্বপ্ন
উৎপলকুমার ধারা

ফুরফুরানি বাতাস তখন বইছে আমার গ্রামে
খেলার মাঠের রোদ ফুরিয়ে সন্ধেটা যেই নামে
ঠিক তখনই দামাল ছেলের দিনের খেলা শেষ
মাথার উপর আকাশ সাজায় চাঁদ ও তারার দেশ।

চাঁদের আলো ঠিকরে এসে ছেলের আঁকার ঘরে
সেই ছেলেটির স্বপ্ন আঁকার ক্যানভাসে রং করে
দেখতে দেখতে রাত্রি যখন এক্কেরে নিঝ্ঝুম
রাখাল বাঁশি নেয় কেড়ে সেই খেলার ছেলের ঘুম।

রাত গড়িয়ে ঘুম ছুটে যায় সুরের হাওয়ায় ভেসে
তার সাথে সেই ছেলেও ছোটে স্বপ্ন দেখার দেশে
ছুটতে ছুটতে খেলার ছলে চাঁদের পরির থেকে
ধার করে রং ইচ্ছে পূরণ স্বপ্নকে নেয় এঁকে।।