রাসবিহারী স্মৃতি পুরস্কার উপলক্ষে ‘ভাইসরয় চিৎপটাং দিবস’ উদযাপন

নিজস্ব চিত্র

১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর দিল্লির রাজপথে ব্রিটিশ সম্রাটের রাজকীয় শোভাযাত্রায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাইসরয় চার্লস হার্ডিঞ্জকে চিৎপটাং করে দেওয়ার মাধ্যমে সরাসরি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসু। তাঁর জন্মের ১৫০ বছর পূর্তিতে বন্দেমাতরম সঙ্গীতকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৩ ডিসেম্বর কলকাতা প্রেস ক্লাবে পালিত হল ‘ভাইসরয় চিৎপটাং’ দিবস এবং প্রদান করা হল রাসবিহারী বসু স্মৃতি পুরস্কার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার বিপ্লবীদের অবদান পরিকল্পিতভাবে আড়াল করার চেষ্টা চলছে, তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিধানসভায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তৈলচিত্র স্থাপন ও জন্মদিন পালনের মাধ্যমে তাঁদের প্রতি সম্মান জানানো হচ্ছে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য বলেন, খুব ছোটবেলা থেকেই স্কুলের পাঠ্যক্রমে বিপ্লবীদের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি এবং তিনি রাসবিহারী বসু ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। প্রবীণ সাংবাদিক ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায় শমীকস্বপন ঘোষের লেখা ‘অপরাজেয় রাসবিহারী’ বইটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে বাংলা সাহিত্যে বইটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর বলেন, বিপ্লবীদের স্মরণে যে কোনও উদ্যোগে প্রেস ক্লাব সবসময় পাশে থাকবে। রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা কল্যাণ চক্রবর্তী রাসবিহারী বসুর সাংবাদিক সত্তার দিকটি তুলে ধরেন এবং বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক।

অনুষ্ঠানে চন্দননগরের রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ‘অপরাজেয় রাসবিহারী’ বইয়ের লেখক ও ‘সুখবর’-এর সম্পাদক শমীকস্বপন ঘোষকে এক লক্ষ টাকা ও স্মারক প্রদান করা হয়। শমীকস্বপন ঘোষ বলেন, রাসবিহারী বসুকে নিয়ে এখনও কাজের অনেকটাই বাকি এবং তিনি পুরস্কারের সম্পূর্ণ অর্থ গবেষক ও অনুবাদকদের কাজে ব্যবহারের জন্য ইনস্টিটিউটের হাতে তুলে দেন। এদিন ‘রাসবিহারী’ নাটকের জন্য শোভাবাজার প্রতিবিম্ব সংস্থা, ‘অগ্নিযুগের অগ্নিশ্বর’-এর লেখক শ্যামল পাল, ‘সূর্য যখন নিপ্পন’-এর লেখিকা সুলগ্না চক্রবর্তী, ‘পরাধীন ভারতে স্বাধীন বিপ্লবী’ তথ্যচিত্রের জন্য শুভাশিস ভট্টাচার্য, ‘দুই রাসবিহারী’ বইয়ের লেখক রমজান আলি ও সফিকুল ইসলাম এবং রাসবিহারী বসুর জাপানি ভাষায় লেখা ‘ইন্দো নো সাকেবী’ গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ ‘ভারতের আর্তনাদ’-এর জন্য অলোক বসুকে স্মারক প্রদান করা হয়।