মহালয়া কাটতে না কাটতেই বড়ো বড়ো পুজোগুলোর উদ্বোধন হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকেই শহরের মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখার জন্য ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রবীণ মানুষ ও বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের কাছে পুজোর আনন্দ অনেকটা মরীচিকার মতো। ভিড় ঠেলাঠেলি করে মণ্ডপে ঘোরা তাঁদের পক্ষে সম্ভব না। তবে চতুর্থীতে এই ঘটনার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে কলকাতা পুলিশ একেবারে অন্যরকমের চিত্র তুলে ধরেছে। এ যেন এক অন্যরকম পুজো। কেউ ভালোভাবে হাঁটতে পারে না, কেউ খুবই দুর্বল, কেউ আবার কথা বলতে পারে না। তাঁরা সকলেই ঠাকুর দেখছে মণ্ডপে মণ্ডপে। আর তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন কলকাতা পুলিশ।
শুক্রবার কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে ৪২০ জন প্রবীণ মানুষ এবং ২৩০ জন বিশেষ ভাবে সক্ষম ছেলে মেয়ে শহরের একাধিক বড়ো বড়ো পুজো মণ্ডপগুলি বিশেষ বাসে করে ঘুরেছে। প্রায় ২২টি বাস এই বিশেষ পুজো পরিক্রমার অংশ ছিল। প্রতিটি বাসেই পুলিশকর্মীরা তাঁদের সঙ্গী হিসেবে থেকেছে। সিপি মনোজ ভার্মা প্রত্যেক বাসে উঠে এই বিশেষ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ফুল দিয়েছেন। প্রত্যেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাঁরা ভেবেছিলেন, বাড়তে থাকা পুজোর ভিড়ে মাতৃ প্রতিমা দেখার আনন্দ অধরাই থেকে যাবে। কিন্তু কলকাতা পুলিশ তাঁদের আনন্দ মাটি হতে দেননি। তাঁদের সকলের মুখেই ছিল খুশির হাসি। কেবল পুজো পরিক্রমা নয় বিশেষ যাত্রীদের সকালের জলখাবার থেকে শুরু করে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও করেছিল কলকাতা পুলিশ।
প্রবীণ এক যাত্রী কৃতজ্ঞতার সঙ্গে জানিয়েছেন, বয়সের ভারে এমন অবস্থা হয়েছে যে পুজোয় এখন আর ভিড় ঠেলে ঠাকুর দেখা সম্ভব হয় না। পুলিশদের তত্ত্বাবধানে এই পুজো পরিক্রমা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সিপি মনোজ বার্মা বলেন, ‘প্রতিবছরই দুর্গাপুজোয় আমরা বিশেষ পরিক্রমার আয়োজন করি। এই বছর এই বিশেষ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে শহরের বেশ কিছু বড়ো পুজো ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।’